চিনে মাটির পুতুল / সৌরাংশু ও পিউ

325.00

শীতকাল এলেই কীরকম একটা বিষণ্ণতা ছেয়ে বসে হৃদয়ে। রেশমকীটদের গুটিতে প্রবেশ করার সময়। সরীসৃপগুলি তখন ঘুমে মগ্ন। চারটে আলু ফুলকপি আর বীট-গাজর। ব্যস, এই নিয়ে রাজত্ব করতে নেমে পড়ি। পৃথিবী ধূসর, মানুষ রঙিন। কিন্তু বাইরের তো কোনও রংই নেই। তাই জ্যাকেট, সোয়েটার, পুলওভার আর মিঙ্ক কোটের রঙে ভুবন ভোলানো।

কিছু কিছু ঘরে, পেটের আগুনের থেকে রাতের আগুন মেটানো দায় হয়ে ওঠে। তখন ঘরের ছাওয়া, খড়কুটো, শুকনো পাতায় টান পড়ে। আর পড়ে অক্সিজেনে। এক একটা রাতে ঘরের আশ্রয় ছেড়ে খেতের আলে জমি আগলানোর জন্য বসে থাকে সময়। কাঠকুটোর আগুন তখন পেটের আগুনের থেকে জোরে জ্বলতে থাকে। অন্ধকারে একটানা ঝিঁঝির আওয়াজ, জোনাকির নেবা-জ্বলা আর তার কিছু দূরে দূরে জ্বলতে থাকা কিছুমিছু চোখ।
নেভে না কখনও। দিনের আলোয় তারা লুকিয়ে থাকে, রাতের বেলায় তারা জায়গা নিয়ে নেয় আপন আপন। নখ দাঁত, খরখরে জিভ, করাতের ধার। এক এক জীবন এভাবেও বেঁচে নেওয়া যায়।

শীতকাল এলেই কেমন ফুরফুরে জীবন ঘনীভূত হয়ে আসে। কিছুমিছু সময়, ঘড়ির কাঁটা যার বরফের চৌহদ্দিতে আটকে আছে, রাজার বেশে এসে হাজির হয়।

শীতকালের রং লাল হয়। লাল, ধূসর দিয়ে যাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করে প্রকৃতি। ঠিক যেভাবে গৃহস্থের সুমুদ্দি মেয়েটাকে আগলে আগলে রাখে। ঠিক যেভাবে অনমনীয় রাগ আগলে রাখে হাসি দিয়ে। অথচ এই লাল বুক বুকের ভিতর ছুঁয়ে ছড়িয়ে ছড়িয়ে যায় শিরায় উপশিরায়। বড়ই পবিত্র সে রং, মনের কালো মুছে দিয়ে দিয়ে সাহস জোগায়। দিন গোনে, মাস-বছরের হিসেবে।

দিন গোনে আর দিন ফিরে ফিরে আসে, ছোট্ট হলেও ফিরে ফিরে আসে। শীতকাল এলেই আমার ঝরনার কথা মনে পড়ে। জলোচ্ছ্বাসের শব্দতে শান দিই। বেশি নয়, মাস দুয়েক বা তার কিছু এদিক ওদিক। সূর্যের আলোর সঙ্গে সঙ্গে সে আছড়ে পড়ে আগুনের বুকে। জলরঙা আগুন তখন মিশে যায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে। টাটকা তাজা লাল রঙের অন্ধকারে!

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “চিনে মাটির পুতুল / সৌরাংশু ও পিউ”

Your email address will not be published. Required fields are marked *