একটা ছড়া রূপকথাপুর দুপুরবেলার গান দুপুর কোথায়? সুর এঁকে যায় টুপুরটাপুর ধান। একটা ছড়া উড়াল পাখি সেই ঢেলেছে সুর অমনি দেখি খিলখিলিয়ে মেঘ হাসে গুড় গুড়। ====== হ য ব র ল থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে দেবাশিস্ বসুর 'টুপুর টাপুর রূপকথাপুর'। প্রচ্ছদ এঁকেছেন ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য। ভেতরের পাতাগুলো ছবিতে ভরিয়ে দিয়েছেন বিজন কর্মকার।
ইহদিল্লি শহরনামা-রবীন্দ্র গুহ
পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে লেখক বলেছিলেন, "তোমাদের অনেক নাম শুনে ভরসা করে এই পাণ্ডুলিপিটা পাঠাচ্ছি।" কতটা ভরসা করেছিলেন লেখক? পাণ্ডুলিপির মূল কপি (যেটা তিনি কাগজে কলমে লিখেছেন নিজে হাতে, সেই কপি) ডাকযোগে পাঠিয়েছিলেন। আমরা আশ্বাস দিয়েছিলাম, যথাযথ যত্নে কাজ হবে। এই উপন্যাস প্রকাশ পাওয়ার কথা ছিল আগের বছর বইমেলায়। কিন্তু কম্পোজ হয়ে প্রথম প্রুফ দেখা হয়ে আসার পরে লেখককে ফোন করে আমাদের অপারগতার কথা জানাই। যে পরিমাণ মনোযোগ এই বই দাবি করে, সেটা সেই মুহূর্তে আমার ভাঁড়ারে ছিল না। সাধারণ বাংলা গদ্যভাষা তো সেটা নয়। বাংলার সঙ্গে হিন্দি, উর্দু, হরিয়ানভি, পাঞ্জাবি মিলেমিশে সে এক বিচিত্র আস্বাদ। রেড ওয়াইনের মতো তারিয়ে তারিয়ে গ্রহণ করতে...
জিনকার্ডের প্রজাপতি-সুমন মহান্তি
সুমন মহান্তি নয়ের দশক থেকে লেখালেখি শুরু করেছেন বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনের হাত ধরে। ১৯৯৫ সালে সাপ্তাহিক বর্তমানে ‘চন্দ্রমল্লিকা’ গল্প প্রকাশের মাধ্যমে বৃহত্তর পাঠকবৃত্তে আত্মপ্রকাশ। গল্প প্রকাশিত হয়েছে দেশ, বর্তমান রবিবার, সাপ্তাহিক বর্তমান, সানন্দা, নন্দন, ভাষাবন্ধন, শিলাদিত্য, তথ্যকেন্দ্র, অদ্বিতীয়া, গল্পগুচ্ছ ছাড়াও অনেক উল্লেখযোগ্য পত্রিকায়। এ পর্যন্ত চারটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ‘জিনকার্ডের প্রজাপতি’ তাঁর নিজের প্রিয় পনেরোটি ছোটগল্পের এক কাঙ্ক্ষিত সংকলন। সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিতব্য এই বইটির নির্বাচিত তিনটি গল্প পড়া যাবে Sristisukh E-Book অ্যাপে। অ্যাপ ডাউনলোডের লিংক এখানে প্রচ্ছদশিল্পী - পার্থপ্রতিম দাস
বাজে গল্প-কাজী ফয়জল নাসের
ফেসবুকে নিয়মিত লেখেন যারা, তাঁদের মধ্যে কাজী ফয়জল নাসের পরিচিত নাম। তাঁর 'বাজে গল্প' সিরিজ আমাদের আটপৌরে জীবন নিয়ে হালকা হাসি, অল্প বিষাদের ডায়েরি। সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে ২০১৮ এর কলকাতা বইমেলায় বই হিসাবে প্রকাশ পেতে চলেছে 'বাজে গল্প'। প্রচ্ছদশিল্পী - সুমিত রায়।
হুক-সৌরভ মিত্র
সৌরভ মিত্রর গল্প সাধারণ মানুষকে নিয়ে। শহরের সীমা থেকে লেখক অনায়াসে পৌঁছে যান প্রত্যন্ত গ্রামে, তাই তাঁর গল্পের বিষয় আকর্ষক এবং বৈচিত্র্যময়। একের পর এক উঠে আসেন মফস্বলের আনস্মার্ট চাকুরে, অনাবাসী ভারতীয়, সহায় সম্বলহীন স্মাগলার, জমি হারানো চোলাই মদবিক্রেতা, মাটির প্রদীপের কারিগর... গল্পগুলোতে মানুষের ভাষা, তাঁদের জীবন সংগ্রাম এতটাই বাস্তব যে, সেগুলোকে গল্প হিসাবে কল্পনা করা কঠিন। আবার একই সঙ্গে অতিলৌকিক দৃশ্য, সূক্ষ্ম প্রতীক এবং ঘটনার নাটকীয়তা এতটাই যথাযথ যে, লেখাগুলোকে সার্থক গল্প হিসাবে মেনে নিতেও কোনও অসুবিধা হয় না। বিভিন্ন সময়ে দেশ, সংবর্তক, শিলাদিত্য, বর্তমান, ঋত্বিক ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত ১৭টি গল্প নিয়ে প্রকাশিত হতে চলেছে সৌরভের গল্প সংকলন...
যৎকিঞ্চিত- রাণা আলম
ক’দিন আগে কলকাতায় একটি পারিবারিক উৎসবে সায়ন্তিকার বাবার সাথে দেখা। আমাকে দেখেই নিমের পাঁচন খাওয়া মুখ করে সোফাতে বসলেন। টিভিতে তখন কোনও একটি সিনেমা চলছিল, যেখানে দুটি ছেলেমেয়ে ভালোবেসে বিয়ে করে অসুখী দাম্পত্যে জড়িয়ে পড়েছে। কফির কাপে চুমুক দিয়ে আমার দিকে ইঙ্গিতপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সায়ন্তিকার বাবা বললেন, “কখনও কখনও এক মুহূর্তের ভুলের ফসল সারাজীবন বইতে হয়, বুঝলে...” আমি সপাটে বললাম, “হ্যাঁ। জলের মতো বুঝলাম।” সায়ন্তিকার বাবা একটু থতমত খেলেন। তারপর অফিসিয়াল স্মার্টনেস বজায় রেখে জিজ্ঞেস করলেন, “কী বুঝলে?” আমি ঠান্ডা গলায় উত্তর দিলাম, “বুঝলাম এই যে, আপনি একমুহূর্তের ভুল করেছিলেন আর সেই ভুলের ফসল হল সায়ন্তিকা যাকে আপনি তেইশ...
গল্প ২৪-অভীক দত্ত
অভীক দত্ত স্মার্ট লেখে, সপাট লেখে। গল্পটাই লেখে। অহেতুক টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা নেই। আর তাই একেবারে সদ্য ইস্কুল পাশ, কলেজপড়ুয়া বা সদ্য চাকরিতে জয়েন করা নওজওয়ানদের কাছে অভীকের জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়। বিদেশ থেকে এক সপ্তার ছুটিতে বাড়ি আসা যুবক গলিঘুঁজি খুঁজে সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে সৃষ্টিসুখের আউটলেটে আসেন অভীকের বই কিনবেন বলে। বা হাইকোর্টে সদ্য প্র্যাকটিসে আসা তরুণী ফোন করে অনুরোধ করেন -- 'ওনার সব বইগুলো আমার চেম্বারে পাঠিয়ে দেবেন প্লিজ? যা লাগে দেব।' ২০১৮ কলকাতা বইমেলায় তাই তামাম পাঠককুলের চাহিদা মাথায় রেখে সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে পার্থপ্রতিম দাসের করা মলাটে অভীকের নতুন দু-ডজন গল্প নিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে 'গল্প ২৪'।
ত্রিস্তর-রাজর্ষি দাশ ভৌমিক
সব স্বৈরাচারীই কি একলা? প্রশ্নটা করার পরেই মনে হল শ্রীমন্ত নস্কর কি আদৌ স্বৈরাচারী ছিলেন? নাটকের দল ছিল তাঁর। গাঁ-গঞ্জে থিয়েটার করে বেড়াতেন। হঠাৎ একদিন পার্টি থেকে তাঁকে ভোটে দাঁড় করিয়ে দেয়। তখন দেশ জুড়ে অন্য হাওয়া, শ্রীমন্ত এবং তাঁর পার্টির অনেকেই জিতে গেলেন। লেখাপড়া জানার সুবাদে আর থিয়েটার করায় পরিচিত মুখ হওয়ার কারণে তিনিই হলেন তালদা তালদা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তারপর দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পর রাজনীতির নিয়ম মেনে হেরেও গেলেন একদিন। কিন্তু তাঁর দলের বাকিরা থেকেই গেল ক্ষমতায়। পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হলেন শ্রীমন্তর সহযোগী পরান মণ্ডল। তাহলে কি ষড়যন্ত্র করে সরানো হল শ্রীমন্তকে? শ্রীমন্ত ভোটে হেরে [caption id="attachment_4085"...
পৃথিবীর বাইরের শহরে-সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়
গাছ আজ তার মাটি আর টব নিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে। আমার মনখারাপ। ওয়াতাশিভা বলছে, ‘আটকিও না’। আটকাচ্ছি না। আমিও আজ জানি, পৃথিবীর যে কোনও স্তরেই কেউ কারও না। অধিকার আসলে একটা মিথ। যে মিথ বা মিথ্যেটা আছে বলেই আমরা কোনো-না-কোনো স্তরে বেঁচে থাকতে পারি। কিন্তু আমি তো ‘সত্যি’ খুঁজতে চেয়েছিলাম, আর তাই... আর কোনও মিথ্যেকে আঁকড়াব না কখনও। গাছ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে... শেষবারের মতো আমি ওকে বুকের আলো দিচ্ছি। শরীরের জল দিচ্ছি। শেষবারের মতো... হাঁ করে... বাতাস দিচ্ছি ওকে। গাছ এইবার হেঁটে যাচ্ছে। পৃথিবীর এত এত গাছের মধ্যে হারিয়ে যাবে ও। ওর কোনও জন্মদাগ নেই। জন্মব্যথা আছে, আর...
আমোদিনীর আরশি-সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়
বাপির যাওয়ার ডাক এল খুব জলদি। যেদিন চলে গেল বাপি, সেদিনই যেন হঠাৎ করে অনেকটা বয়স বেড়ে গেল মামুর। কেবল ঘুরেফিরে মাথা নাড়ে আর বলে, “আমায় ‘গোরাবাবু’ বলে আর কোনোদিন ডাকবে না কেউ!” আমোদিনী চায়ের কাপটা মুড়ির বাটিটা নিয়ে সামনে যায়। এখন তো সে আর ছোটটি নেই। দুজনেই নিঃশব্দে চোখ মোছে। কাজকম্ম মিটিয়ে ফেরার সময় আমোদ মামুর হাত ধরে বলে, “সাবধানে থেকো মামু। তুমি ছাড়া...” মামু ধমকে বলে, “ওসব বলে কাঁদাবি নাকি আবার আমাকে! আমি ঠিক থাকব। তুমি ঠিক থেকো, মা-কে দেখো...” আমোদিনী আশ্বস্ত হয়। মামু তো বলেইছে ঠিক থাকবে। শুধু খেয়াল থাকে না যে কতদিন ঠিক থাকবে সে হিসেব...