নিবিড় প্রকৃতিচেতনাকে সঙ্গে নিয়েই স্বতন্ত্র গল্পের ভুবন নির্মাণ করেন অসিত কর্মকার। মানুষের ও প্রকৃতিকে তিনি আলাদা করে দ্যাখেন না, কারণ, তাঁর ধারনায় যে-প্রকৃতি, তা মানুষকে নিয়েই সম্পৃক্ত। ফলে, এই চেনা প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া হাজারও ঘটনা, মায় কই-কেউটের লড়াই-ও যে কখন কী করে মানুষের হেরে যাওয়া, আর হারতে হারতে শেষবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর আখ্যান হয়ে ওঠে, আমরা তা বুঝেই উঠতে পারি না। গল্প শেষে এমন এক ভুবনে লেখক এনে হাজির করান, যেখানে, মানুষ, প্রকৃতি আর বেঁচে থাকার বৃহত্তর রাজনীতি খোলা বইয়ের পাতার মতোই পাঠকের সামনে উন্মুক্ত হয়। সেখানে কেউ কারও থেকে আলাদা নয়। এই সামগ্রিক দৃষ্টিতেই ধরা দেয় এক বৃহত্তর সমাজ। তার দারিদ্র্য, দৈন্য আবার সম্পদ-সম্ভার নিয়ে তা ঢুকে পড়ে গল্পের ভিতর। গল্প ধরে ধরে এভাবেই একাধিক উদাহরণ দেওয়া যায়। যেখানে লেখক এমন এক জনজীবনের কথা, মুখের ভাষা, খাওয়া-দাওয়া, আচর-আচরণ তুলে ধরতে থাকেন, প্রথ্যাগত অভ্যেসে যাকে আমরা গ্রামীণ জনজীবন বলে থাকি। কিন্তু গল্পকার প্রকৃত প্রস্তাবে এই বিভাজনকেই অস্বীকার করেন। অথবা স্বীকার করেন এই মর্মে যে, মানুষের আখ্যান যদি মানুষের কাছে পৌঁছায় তবে ধারণায় স্বীকৃত বিভাজনও অনুভবের সামনে নতজানু হতে পারে। অসিত কর্মকারের গল্প তাই শেষ পর্যন্ত গল্প হয়েও বহুমুখী বিস্তারে চিন্তার উৎসমুখ খুলে দেয় পাঠকের।
ছায়াপতনের শব্দ
অসিত কর্মকার
প্রচ্ছদ – অভিব্রত সরকার
Reviews
There are no reviews yet.