২১টি গল্প

299.00

অমর মিত্রর ২১টি অগ্রন্থিত গল্প।

১৯৭৭-এর এক সকালে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই সময় শৈবাল মিত্রর সঙ্গে আলাপ। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ হওয়া, সাহিত্যের আড্ডায় বসা জীবনের পরম প্রাপ্তি মনে হয়। অতি বর্ণময় এক মানুষ ছিলেন তিনি। অমৃত পত্রিকার সম্পাদক, ছেড়েছেন আনন্দবাজার। তা নিয়ে কত কথা। শ্যামল ১৯৭৭ সালে অমৃত পত্রিকায় আমার একটি গল্প ছাপেন ‘গাঁও বুড়ো’। পুজোয় ছাপবেন বলে নিয়ে, সাধারণ সংখ্যায়। তিনি আমাকে তখন ঠিক পছন্দও করতেন না। কোনও লেখা পড়েননি। এমনিতে কখন কী বলবেন, তার কোনও আগাম ধারণা করা দুঃসাধ্য। ভয় করতাম। কিন্তু গাঁও বুড়ো ছাপার পর তিনি আমাকে উপহার দেন তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘কুবেরের বিষয় আশয়’। গল্পটি তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। গাঁও বুড়ো পড়ে মহাশ্বেতাদি বালিগঞ্জ স্টেশন রোডে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ক্রমশ আলাপ বাড়তে থাকে। ১৯৭৮ সালে আমার কর্মস্থল ঝাড়গ্রামের এক কো-অপারেটিভ ব্যাংক থেকে ২০০০ টাকা ঋণ নিয়ে আমার প্রথম বই মাঠ ভাঙে কালপুরুষ প্রকাশ করি। তখন আমি মাইনে পাই ৫০০ টাকা। ২০০০-এ চার কাঠা জমি হতো, কোনও এক সহকর্মী বলেছিলেন। তিনি জানতেন, আমি ভাড়াটে বাড়ির বাসিন্দা। প্রণবেশ মাইতি ‘মাঠ ভাঙে কালপুরুষ’-এর প্রচ্ছদ করে দিয়েছিলেন। একটি পয়সাও নেননি। কবি প্রভাত চৌধুরীর বাড়িতে বইটি প্রকাশিত হয় শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে। বন্ধুরা, তুষার, সমীর, পবিত্রদা, শচীন, দীপঙ্কর — ছিলেন।
‘মাঠ ভাঙে কালপুরুষ’ ছিল আমার প্রথম বই, তারপর ৪১ বছর কেটে গেছে। গল্প লেখা কমেছে, কিন্তু ছেদ পড়েনি। আবার এই বই। এই ২১টি গল্পের বইয়ের অধিকাংশ অগ্রন্থিত গল্প। নানা সময়ে লেখা গল্প, হারিয়ে যাওয়া গল্প উদ্ধার করেছি, এই গ্রন্থের জন্য। আবার সদ্য লেখা গল্পও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এই একুশে। গল্প লেখা আমার কাছে এখনো সব চেয়ে আনন্দময় অভিজ্ঞতা। আর গল্পের বই প্রকাশের উত্তেজনাও প্রশমিত হয়নি এত বছরে। সব সময়ে মনে হয় এ যেন আমার প্রথম বই। গল্প লিখি আমি আন্দাজ করে। আরম্ভের সূত্রটি সামান্য, লিখতে লিখতে লেখা চলে আসে। মনে হয় শূন্য থেকেই নেমে আসে গল্প। বিন্দু থেকেই তা সিন্ধু হয়।

 

— অমর মিত্র

Customer Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “২১টি গল্প”

Your email address will not be published. Required fields are marked *