এই সময়ের তরুণ কথাকারদের মধ্যে হামিরউদ্দিন মিদ্যা অন্যতম আলোচিত, তাঁর শক্তিশালী লেখনীর কারণেই। বাংলা কথাসাহিত্যের শাশ্বত ব্যাটানটি তিনি তাঁর চর্চিত হাতে তুলে নিয়েছেন বেশ কিছুদিন হল। বয়স অল্প। কিন্তু জীবনের যে পাঠ এই তরুণ লেখক পেয়েছেন বা প্রতিনিয়ত পেয়ে থাকেন, তা কোনও বয়সের তোয়াক্কা করে না। জীবনই তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছে অহরহ চোরাবাঁক, ভেঙে পড়া আলপথগুলিকে। জীবনই তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছে এবড়োখেবড়ো মাটির সখ্য। জীবনের এই আহরণ আর সংবেদী মন, তরুণ লেখককে দিয়েছে এক অবিশ্বাস্য পরিণতিবোধ। যা তাঁর গল্পের ছত্রে ছত্রে ফুটে ওঠে। পাঠক তাঁর পর্যবেক্ষণের গভীরতার সামনে দাঁড়িয়ে বিস্মিত হয়, এবং সবশেষে গল্পে যে অভিঘাত তুলে রাখেন তিনি, তাতে বিহ্বল হতে হয়। আর এই সবকিছুর মধ্যে হামিরউদ্দিন আসলে সচেতনভাবে নির্মাণ করে চলেন তাঁর চিরচেনা গ্রামীণ জীবনের সুষমা। নাগরিকতার শর্তগুলো তিনি খুব আলগোছে ভেঙে ভেঙে দিয়ে এগোতে থাকেন। শুধু ধুলোকাদার গন্ধ বা ভাষাতেই নয়, তাঁর গল্প তাই সঠিক অর্থেই নিরাবরণ জীবনকে জড়িয়ে ধরতে চায়, চায় নিরলংকার, পালিশহীন, নগ্ন জীবন আর তার সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে। এই আশ্লেষ পাঠককে ভাবায়, অস্থির করে। সেটাই হামিরউদ্দিনের বৈশিষ্ট্য, সিগনেচার। তরুণ বয়সেই তিনি তাঁর সাহিত্যচর্চার অভিমুখটি চিহ্নিত করতে পেরেছেন বা বেছে নিয়েছেন সচেতনতাতেই। তাঁর মতো প্রতিশ্রুতিমান তরুণ লেখকের প্রথম গল্প বই প্রকাশ করতে পেরে সৃষ্টিসুখ আনন্দিত।
Reviews
There are no reviews yet.