শীতকাল এলেই বেজে উঠে রোদ্দুরের স্যাক্সোফোন। আর শনশনে এক হাওয়ার দুনিয়া থেকে গলায় আদর ঢেলে গেয়ে ওঠেন শ্রাবন্তী মজুমদার, ‘মধুপুরে পাশের বাড়িতে তুমি থাকতে…’ কে থাকত? সে এক ডানাভাঙা যুবক, যে গেল নব্বইয়ে ফেলে এসেছে তার কৈশোর আর বেড়ে ওঠার দিনগুলো। সে এক ‘শহরের প্রেত’, যে এ শহরকে ভালোবেসে শুষে নিতে পারে সব বদনাম। সমস্ত ক্ষতের গ্লানি। সে এক যুবক, যার আধখানা পড়ে আছে রেডিওর টিউন, টিউশন-রোম্যান্স আর রঞ্জাবতীদের বারান্দা থেকে ছুঁড়ে দেওয়া ফ্লাইং কিস-এ। আর বাকি আধখানা নিয়ে ছেনালিময় লোফালুফি খেলায় মজে আছে এই ফেসবুক, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলেজিন্স, এই রোবটের ফাঁপা দুনিয়া। আর সে যুবক তার সমস্ত ক্লান্তিতে, দ্বিধা-দ্বন্দ্বে বিদীর্ণ হতে হতে জড়িয়ে ধরে তার প্রেমিকাকে। মৃদু চুম্বন করে সাজায় ডিনার, কোনও এক অলৌকিক রেস্তরাঁয়। সে কি এই কলকাতা শহরে! নাকি অন্য কোথাও! নাকি মস্ত এই ভুবনগ্রামে সে যুবক বুকোস্কির কবিতাপাঠ শুনে এসেই কপালে মেখে নেয় কলকাতা বইমেলার ধুলো! এসব হিসেব অবশ্য সে করে না। সে জানে তার যা গেছে আর যা আছে তাই দিয়েই জীবনের সওদা সম্পূর্ণ হবে। আসবে নতুন সময়। ফলত সাদা শার্টে নীল দাগ দেখে সে চমকায় না, কেবল প্রত্যাশা করে স্বর্গীয় সার্ফ এক্সেলের। সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘টুকরো লেখা মনকলম’ আসলে আমাদের এই টুকরো জীবনেরই কোলাজ। তার মধ্যে শুধু সৌভিক একাই নেই, আছি আমি-আপনি সকলেই। আছে আমাদের ফেলে আসা জীবন। আছে আমাদের বর্তমান যাপনের কাটা দাগগুলোও। সেই সব মিলিয়েই তো তিরিতিরিয়ে বয়ে চলেছে জীবন। সেই প্রবাহকেই ছুঁয়ে থাকতে চায় সৌভিকের এই লেখারা। যা কবিতা নয় ঠিকই, তবে কবিতার থেকে কম কিছুও নয়।
Reviews
There are no reviews yet.