মাশান রহস্য / সৌমনা দাশগুপ্ত

160.00

সংস্কৃতি, বিশেষত কৌম সংস্কৃতিই আমাদের জাতি-জনজাতির প্রকৃত ইতিহাসের সন্ধান দেয়। রাজারাজড়াদের যুদ্ধবিগ্রহের তুলনায় সেই ইতিহাস কম মূল্যবান নয়। তা বলে মানুষের কথা। তার যাপনের সংগ্রাম, দুখ-বেদন, রাগ-ক্রোধ, আহত অভিমান, আদান-প্রদান এসবেরই সন্ধান দেয় এই ইতিহাস। আদিম মানুষ থেকে আজকের সমাজবদ্ধ মানুষ হয়ে ওঠার ধারবাহিকতার দিকে লক্ষ করলে এবং মিথ ও মৌখিক ইতিহাস মিলিয়ে-মিশিয়ে দেখলে দেখা যায় পুরাণে বর্ণিত দেবদেবীর পুজো করা ছাড়াও ধীরে ধীরে প্রকৃতির কাছে অসহায় মানুষের মধ্যে স্থানীয় নানা প্রতিকূল অবস্থার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তৈরি হয় এক সমান্তরাল পূজা-অর্চনার ধারা, যা জন্ম দিয়েছে বিভিন্ন লোকদেবতার। এরকমই ঘন জঙ্গল, বন্য জন্তু, শ্বাপদ, বিপজ্জনক কীটপতঙ্গসংকুল উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্স অঞ্চলের এক সুপ্রাচীন লোকদেবতা হলেন মাশান। গবেষকদের মতে, মানুষের ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত কল্যাণ কামনায় এই দেবতার পুজো করা হয়। আবার ভিন্নমতও রয়েছে। প্রায় পাল রাজাদের সময় থেকে মাশানের ভাবনার সূত্র পাওয়া যায়। উত্তরবঙ্গের নানা অঞ্চল, সিকিম, মেঘালয় এবং আসাম ছাড়াও বৌদ্ধ-ধর্ম প্রভাবিত শ্রীলংকা, নেপাল আর বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে মাশানের আরাধনা প্রচলিত রয়েছে। প্রাচীন অঙ্কনশৈলীর ছোঁয়া মাশানের গঠনের মধ্যে এখনও রয়ে গেছে। এর থেকে এই দেবতার অস্তিত্বের প্রাচীনতা সম্পর্কে একটা ধারণা করা যায়। পাওয়া যায় নানা রূপভেদ, যথা– বাড়ীকা মাশান, তিসিলা মাশান, ঘাটিয়া মাশান, ছুঁচিয়া মাশান, চলান মাশান, বহিতা মাশান, কাল মাশান, কুহুলীয়া মাশান, নাঙ্গা মাশান… গভীর আগ্রহে মাশান নিয়ে এইসব গবেষণা করে চলেছিলেন তরুণী মেঘনা। হঠাৎই খোঁজ পেলেন মাশানের বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য পটের। তারপরই রহস্যজনকভাবে উধাও তিনি। সেই সঙ্গে নিখোঁজ হল মাশানের দুষ্প্রাপ্য পটগুলিও। কোথায় গেলেন মেঘনা? কোথায় হারাল এই দুষ্প্রাপ্য সম্পদ? টানটান থ্রিলারের আঙ্গিকে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরারই আখ্যান ‘মাশান রহস্য’।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “মাশান রহস্য / সৌমনা দাশগুপ্ত”

Your email address will not be published. Required fields are marked *