‘এত রক্ত কেন!’ রবীন্দ্রনাথের ছোট্ট হাসির সেই ভীষণ প্রশ্নটুকুর প্রাসঙ্গিগতা আজও মুছে ফেলতে পারেনি সভ্যতা। বরং দুঃসময়ের ছদ্মবেশে যে জীবন আমাদের শিরায়-উপশিরায় ঢুকে পড়ে, তা যেন আমাদের মাতিয়ে তোলে আরও কুরবানিতে। আর ঠিক তাতার মতোই লিটন অথবা ইসমাইল ভাবতে থাকে, এত কুরবানি কেন? এই দুনিয়ার সবাই একে অপরকে কুরবানি দিতে ব্যস্ত কেন? এমন একটা জায়গা কি নেই, যেখানে এই হত্যালীলা থেকে মুক্তি মেলে? সেই কিশোর শুনেছে, আছে এক জায়গা। এক পুকুর। যেখানে মাঘীপূর্ণিমায় নাইতে নেমে জলপরি। কোন দরবেশ তাকে দেখাবে সেই জলপরি? সেই খোঁজেই আমাদের শামিল করেন নীহারুল ইসলাম তাঁর ‘পরিকথা’ উপন্যাসে। আর আমরা বিস্ময়ে খেয়াল করি এক কিশোরের অনুভবের শুদ্ধতার সামনে আমাদের সভ্যতার ফাঁকি কীভাবে বেআব্রু হয়ে পড়ছে। আমাদের বিভাজিত ধর্মবোধ, তথাকথিত রাজনীতির সারশূন্যতা কীভাবে প্রকট হয়ে পড়ছে। তবু পরি দেখার নেশা কাটে না। বস্তুর সেই অলৌকিক পরিকে দেখার জন্যই যেন বয়ে চলেছে জীবন? নাকি এ আসলে সুসময়েরই দুরাশা, যে সুসময় মুছে দিতে পারে কুরবানি? কিশোরমনের বিচিত্র গতি, পরি-দরবেশের মায়াবি জগতের মধ্যেই এভাবে রাজনৈতিক মাত্রা সংযুক্ত করেন কুশলী ঔপ্যনাসিক। কিন্তু পরি দেখার সেই স্বপ্ন কি পূরণ হবে লিটনের? এ উপন্যাস সেই লৌকিক যাত্রায় সেই অলৌকিকেরই সন্ধান।
Reviews
There are no reviews yet.