পারুর আশ্চর্য দিনগুলি

150.00

About The Author

অমৃত সাহা

“১৯৯৮ সালের বইমেলায় বিজল্প থেকে বেরিয়েছিল ‘পারুর আশ্চর্য দিনগুলি’, ২৭টি কবিতার একটি পুস্তিকা। সামান্য কিছু কপি, কম দাম। ফলে বইমেলার তিন-চার দিনের মধ্যে সবগুলি কপি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। এমনকী আমার কাছেও একটি কপি ছিল না, দরকারে একটু নেড়েচেড়ে নেব। পরে বুঝেছি, ‘দরকার’ ব্যাপারটা আমার সঙ্গে যায় না। জামা-জুতো-খাতা-পেন-স্নেহ-প্রশ্রয়-ভালবাসা-প্রেম-পিতৃত্ব, সবই আমাকে লড়াই করে জিতে নিতে হয়েছে। শুধু একটি জিনিসই থেকে গেছে সঙ্গে। সে হল পারু।
যেহেতু নানান না-পাওয়া সেই ছোট্টবেলা থেকে ক্রমাগত ঘটে চলেছিল, গোঁফ বেরোনোর দিনগুলিতেই বুঝে গিয়েছিলাম, পারু ছাড়া আমার আর গতি নেই। আঁকড়ে ধরেছিলাম তাকে। সে-ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। সেই সময়ে একটি গদ্যে ঘোষণাও করে দিয়েছিলাম যে, আমি কবিতা লিখি না, পারু লিখি। লিখি তো আসলে না, রোজ-প্রতিদিনের হেরে-যাওয়াগুলো বর্ণনা করি মাত্র। একজন হেরে-যাওয়া মানুষের কথা কেউ শুনতে চায় না, আমার এইসব প্রলাপ অন্য কেউ সহ্য করবেন কেন, ভাবতাম প্রায়ই! সেই সময়ে একটি প্রখ্যাত পত্রিকায় একগুচ্ছ কবিতার শিরোনামে আমার দেওয়া ‘পারুর আশ্চর্য দিনগুলি’ কেটে দিয়ে লেখা হল ‘আবার পারু!’ প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলাম। উঞ্ছবৃত্তি করতে করতে ততদিনে বুঝে গিয়েছিলাম সম্পাদকের সঙ্গে পারুর প্রেমিকের রাগ যায় না, যেমন যায় না সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গানে বিসমিল্লার সানাই। ফলে, সদ্ভাব থাকল; রাগ রয়ে গেল চাপা। কবিতা আর দিলাম না। না দিতে দিতে, জীবনের মার পালটা-মার খেতে খেতে আমার রচনার জগত ক্রমশ সরে গেল আমার কাছ থেকে, ঠিক আমার জীবনের ভূগোলের মতো। আর আশ্চর্য, এবারও আমার সঙ্গে রয়ে গেল শুধু পারু।
এই বইটি সেই সব হেরে যাওয়া দিনলিপির এক সন্নিবেশ। আগের বইটি থেকে নেওয়া হল ২৬টি, নতুন জুড়লো ৫৭টি। খানিক কাটাকুটি, খানিক শব্দের ওজন মাপামাপি, খানিক উদয়নের ধমকানি, এই সব মিশে থাকল বইটিতে। প্রথম বই থেকে নেওয়া কবিতাগুলোয় কিছু বদল হল, পালটে গেল ক্রম-ও। পরে কখনও কেউ মেলাতে চাইলে গুলিয়ে যাবে? যাক! আমার এই পরিপাট-ছন্নছাড়া জীবনকে গুলিয়ে দেওয়ার জন্যেই পারুর জন্ম।”

কণিকা সাহিত্য থেকে প্রকাশিত ‘পারুর আশ্চর্য দিনগুলি’ সম্পর্কে লিখেছেন বইটির কবি অমৃত সাহা।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “পারুর আশ্চর্য দিনগুলি”

Your email address will not be published. Required fields are marked *