সত্তর দশক মধ্যবিত্ত বাঙালি যুবকের কাছে এক ঝড়ের দশক। ঝড় যেমন দমকা হওয়ায় খড়কুটোর মতো সবকিছুকে উড়িয়ে নিয়ে যায়, এই দশকও সেই রকম বাম রাজনীতির দমকা হাওয়ায় বাঙলার যুবক হৃদয়কে তোলপাড় করে দিয়েছিল। ভাববার ফুরসৎ পর্যন্ত দেয়নি। ঝড় অবিশ্যি থেমেছিল, ফুরসৎও মিলেছিল, কিন্তু তার রেশ বয়ে বেড়াতে হয়েছিল মধ্যবিত্ত বাঙালিকে দশকের পর দশক।
দেবু নামক এক মধ্যবিত্ত বাঙালি যুবকের সেই সময় পার করার কাহিনিকে ঘিরেই এই উপন্যাস। সেই সময়ের বাস্তবতার নিরিখে রাজনৈতিক কচকচানি এবং তার ঘাত-প্রতিঘাতের তর্জমা স্বাভাবিকভাবেই উপন্যাসে এসে পড়েছ। তা না হলে সেই সময়ের আসল চেহারাটাই ফুটে ওঠে না। উপন্যাসে বর্ণিত সমস্ত চরিত্রই কাল্পনিক। যদি বাস্তবে কোথাও তার মিল কেউ খুঁজে পান, সেটা নিছকই কাকতালীয়। লেখক সেখানে অসহায়।
রাজনৈতিক আলোচনা হবে অথচ সমালোচনা হবে না, বিরূপ মন্ত্যব্য হবে না সেটা অনেকটা সোনার পাথর বাটির মতোই। তর্ক-বিতর্ক, যুক্তি-পালটাযুক্তি। মত-বিরুদ্ধমত, পক্ষ-বিপক্ষ — এগুলোই সভ্য সমাজের প্রতীক বা প্রচলিত ধারা। যা চলে আসছে, যা উন্নত মননের হদিশ দিতে সমর্থ, তার বিপরীতে হাঁটার ইচ্ছে বা চেষ্টা আমার কোনোটাই নেই।
আমার প্রথম প্রয়াসের মতো এ বারেও আমি দারুণভাবে ঋণী ্ডঃ সুশোভন অধিকারীর কাছে। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও যেভাবে সময় দিয়ে নিপুণভাবে ওঁর মতামত ব্যক্ত করে আমাকে চমকৃত করেছেন, এককথায় আমি অভিভূত।
কৃতজ্ঞতা জানাই শ্রী রুদেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং শ্রী অনুপম ব্যানার্জ্জীকে মূল্যবান মতামত দিয়ে লেখাটাকে যথাযথ রূপ দেওয়ার জন্য।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা দিতে হয় শ্রী কালিকিঙ্কর ভট্টাচার্যকে, রাণাঘাটের বাড়িতে অনেক অমূল্য সময় ব্যয় করে ওঁর বহুবিধ জ্ঞানের সুনিশ্চিত ভাবনার আলোকপাত করার জন্য।
আমি ঋণী শ্রী প্রশান্ত চ্যাটার্জ্জীর কাছে, দীর্ঘ অধ্যাপক জীবন কাটানোর পরও ‘কালধ্বনি’র মতো পত্রিকার সম্পাদনা করা এবং নানান প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেও আমাকে যেভাবে উৎসাহ এবং লেখার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। যাঁর সান্নিধ্যে আমি বরাবরই তৃপ্ত হয়েছি।
আমার অত্যন্ত প্রিয়, বইপাগল শ্রী ঋজু ঘোষের প্রতি আমার ঋণের কোনও শেষ নেই। প্রায় ছাব্বিশ ঘণ্টা বিমানযাত্রা করার পরও আমার বইয়ের প্রুফের কাজ যেভাবে নিবিষ্ট চিত্তে সম্পন্ন করল, তাতে এটাই প্রমাণ হয় ঋজু সত্যি সত্যিই একজন বইপ্রেমিক।
আমার ধন্যবাদ সৃষ্টিসুখ প্রকাশনা সংস্থাকে এই বই প্রকাশ করার জন্য।
বইপ্রকাশের আগে অনেক কর্মকাণ্ডের প্রয়োজন হয়। সব কিছুর উদ্দেশ্যের মূলেই হচ্ছে পাঠকের কাছে পৌঁছনো এবং তাদের মনের নাগাল পাওয়া। সেই আশাতেই রইলাম।
মৃন্ময় সান্যাল
শ্রীরামপুর
Reviews
There are no reviews yet.