মকশোর বাক্স সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়

মকশোর বাক্স

এই সময়ের অন্যতম গল্পকার সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়। তাঁর রচনার ক্যানভাসটি প্রসারিত, বহুরঙের মিশেল সেখানে। গেরস্থালির চাবি থেকে সম্প্রীতি, ক্লস্ট্রোফোবিয়া থেকে কন্যাভ্রূণ হত্যা – এরকম ভিন্নতর বিষয় তিনি সন্নিহিত করেন এ-সংকলনে। তাঁর মুনশিয়ানা এই যে, কখনও সেই বিষয় তাঁর শৈলীকে ভারাক্রান্ত করে না। গদ্যের সহজ ও স্বচ্ছন্দ চলনকে আটকায় না। ফলে দিনের শেষে একটি নিটোল গল্পই উপহার পান পাঠক। আর সেইসঙ্গে বোধের ভিতর খেলা করতে থাকে অন্তর্নিহিত ব্যঞ্জনাটুকু। নির্মাণ পেরিয়ে সৃষ্টির দিকে এই অভিযাত্রায় সঙ্গীতা ইতিমধ্যেই বহুজনের প্রশংসা পেয়েছেন। বহু রসিক পাঠকের নিবিড় পাঠে জায়গা করে নিয়েছে তাঁর গল্পেরা। অন্তরের তাগিদ আর পাঠকের টানেই পুনরায় কাগজ-কলম টেনে নেন তিনি, আর একদিন খুলে...

বাবালি বাবালি বাবালি বিশ্বদীপ চক্রবর্তী

বাবালি বাবালি বাবালি

যে চলে যায়, তারও অস্তিত্ব থেকে যায় আমাদের সত্তায়। যেমন অঙ্গহানির পরও বদলায় না ব্রেন-ম্যাপ। যন্ত্রণার অনুভূতি গাঁথা থাকে মগজে-কোষে। যেমন কাঁটাতার অতিক্রম করে গেলেও অন্তরে মিশে থাকে দেশ। এ-পৃথিবীটা নাকি সমতল হয়ে গিয়েছে। গত দুশকে পুঁজির আনাগোনা আর তথ্যের ভাণ্ডার খুলে গিয়ে আস্ত এক গ্রাম হয়ে উঠেছে তা। কিন্তু, মানুষ তার সত্তা ও অর্জন নিয়ে কি একেবারে পর্দাগুলো সরিয়ে দিতে পেরেছে! নাকি তার যাপনেই একটা দেশের ভিতর গোপনে রয়ে গিয়েছে আর-এক দেশ, যেমন গল্পের ভিতর থাকে অন্য গল্প। যেমন লিঙ্গের চিরায়ত বাইনারি ধারণার বাইরেও থেকে যায় অন্য কোনও সমতলের সম্ভাবনা। বিশ্বদীপ চক্রবর্তীর আনাগোনা এই পরিসরেই। তাঁর গল্প ভুবনগ্রামের মানুষের...

বিজ্ঞানচর্চার সেকাল একাল অর্পণ পাল

বিজ্ঞানচর্চার সেকাল একাল

“…থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির কথাই ধরি। এডিংটনকে একবার লুডভিগ সিলভারস্টাইন প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বিশ্বে নাকি মাত্র তিনজন এটা বোঝেন?’ অনেক ভেবে এডিংটন বললেন, ‘আসলে আমি ভাবছি তৃতীয় জনটা কে?’ আবার ধরুন ম্যাক্সওয়েলের থিয়োরি। পড়তে গেলে শুরুতেই কাপা, ল্যামডা, আলফায় সজ্জিত হয়ে গোদা একটা সমীকরণ পথ আটকে দাঁড়ায়। সে ভেদ করে ভিতরে ঢোকে কার সাধ্যি! হকিং যখন ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম লিখেছিলেন, শুরুতে নাকি সব অঙ্ক আর সমীকরণ দিয়ে ঠেসে দিয়েছিলেন। প্রথম খসড়া দেখে তাঁর প্রকাশকের চোখ কপালে। ‘করেছেন কী স্যার? এ বই লোকে পাতা উলটেই আবার রেখে দেবে। সমীকরণ কমান।’ কমাতে কমাতে এমন দশা হল, ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়। শেষে নাকি প্রকাশকের...

মনকেমনে মনখারাপ জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়

মনকেমনে মনখারাপ

পিচ্ছিল মনটাকেবেঁধে রাখি গোপনে কোথাও,একগুঁয়ে প্রেম জানেরোজ তুমি কার কাছে যাও। স্বপ্ন চিনেছে শুধুভেজা চুল, শরীরের ঘ্রাণ,বেওকুফ দিল বলে—আজনবি, তোমাকে সেলাম! কোন আলোয় কখন যে নেমে আসে মনখারাপ! কখন যে মনকেমনের মেঘ বৃষ্টি হয়ে ভাসিয়ে দেয় হৃদয়পুর, আমরা ঠাহর করতে পারি না। কিন্তু সবই তো থাকে। দৈনন্দিনের ভিতরেই যেন একান্তে কার খোঁজ চলে আমাদের। স্বপ্নে যে ধরা দেয়, আসলে সে অধরা। সেই দেখা, না-দেখার মাঝেই মনকেমনের মেঘ, মনখারাপের বৃষ্টি। কবি অপেক্ষা করেন এ-সবই ধারণ করার জন্য। আর শব্দে-ছন্দে নির্মাণ করেন তাঁর কবিতার শরীর। জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়ের কবিতা পাঠককে নিয়ে যায় সেই মায়াকলোনিতে, যেখানে তোলা থাকে বেওকুফের সেলাম। আজনবি কিংবা কবিতার জন্যই।...

রাজদ্রোহ প্রথম পর্ব রোহণ কুদ্দুস

রাজদ্রোহ (প্রথম পর্ব)

প্রথমে পরিকল্পনা ছিল হিটলারের ওপর হওয়া প্রাণঘাতী হামলাগুলো নিয়ে কাজ করার। নিজের সময়ে নিজের দেশে বন্দিত একজন রাষ্ট্রনায়ককে যে বিনা প্রশ্নে সমস্ত জার্মান নাগরিক মেনে নেননি এবং ফুয়েরারের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার পেছনে প্রায় সময়ই যে দেশপ্রেম কাজ করেছে, এটুকুই একটা উপন্যাসে দেখানোর ইচ্ছা ছিল। কিন্তু লিখতে গিয়ে দেখলাম হিটলারের জীবন এবং তাঁর উত্থান সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা না থাকলে পাঠকের পক্ষে সেই লেখার রসাস্বাদন সম্ভব নয়। তাই পরিকল্পনা বদলে বইটাকে নতুন করে সাজানো হল। পাঠকের সুবিধার্থে পুরো প্রজেক্টটা দুটো পর্ব বা বলা ভালো দুটো আলাদা বইয়ে ভেঙে নেওয়া হল।প্রথম পর্বে রইল শিল্পী হতে চাওয়া বোহেমিয়ান হিটলারের রাজনৈতিক নেতা হিসাবে আবির্ভাব এবং ক্ষমতা...

১৫টি গল্প অলোক গোস্বামী

১৫টি গল্প

সুস্থিতি এবং অস্থিরতার মধ্যবর্তীতে অস্বস্তিকর তবু ক্লান্তিহীনভাবে চলমান যে জীবন, তার ভিতরেই জন্ম নেয় অলোক গোস্বামীর গল্পেরা। তাঁর কাহিনির নির্মাণ যেন অনেকটা পাহাড়ি রাস্তায় সফরের মতো। এই সরলরেখা। কিন্তু মুহূর্তেই তা মুখোমুখি হয় অপ্রত্যাশিতের। প্রতি বাঁকে কেবলই দৃশ্যের জন্ম; সামনে অতলান্ত খাদ; হয়তো মৃত্যু; সমাপ্তি; আবার একটা রাস্তাও চোখে পড়ে। পুনরায় এগিয়ে যাওয়া। এভাবেই ঘনিয়ে ওঠে অলোকের গল্পেরা। যে জীবন কাম্য আর যে জীবন বাস্তব, তার মেলা এবং না-মেলার দ্বান্দ্বিক মুহূর্ত মাঝেমধ্যেই আমাদের বিচলিত ও বিহ্বল করে। বস্তুত সম্ভব-অসম্ভবের সেই সেতুটিরই অভিমুখী এই লেখক, যা প্রচলিত কোনও অর্থে জীবনকে ব্যাখ্যায় রাজি নয়। তাঁর কাছে সংজ্ঞায়িত নয় জীবন, ফলে নেই কেন্দ্রিকতা।...

শরবিদ্ধ ক্যারাভান সৃজিতা সান্যাল

শরবিদ্ধ ক্যারাভান

“বড়ো বেশি কথা বলা হল, এ বছর?” তদসত্ত্বেও নতুন সূর্য উঠিলে আর্দ্রতার কথা মনে পড়ে, বোরোলিনের কথাও। রাস্তার মোড়ে চায়ের ভাঁড়ে চুমুকের কথা, সেও কি…? সব ছন্দ ইদানীং বিলম্বিত লয়ে শুরু হয়। লেখায় বিশেষণের সংখ্যা নগণ্য এবং আশ্চর্য ধ্রুবপদের ব্যবহার ছাড়িতে পারি নাই বলিয়া নম্রসুরে বলিতে চাই, তফাত যাও! লালিত নিঃশব্দ বাংলা কবিতাকে ও বাংলাভাষার কবিকে দিয়েছে যে সম্ভ্রান্ত উত্তরাধিকার, সৃজিতা সান্যাল তাঁর সময়ে বসে আপন করে নিয়েছেন সেই নিঃশব্দকেই। তাঁর ভাষা স্বতন্ত্র। উচ্চারণ নম্র এবং দৃঢ়। বিনোদনমুখর সুলভ বাজার থেকে তিনি সরিয়ে রাখতে চান তাঁর অক্ষরের শক্তি ও প্রেম। কারণ, তিনি জানেন ‘লিখতে হবে নিঃশব্দে কবিতা, এবং নিঃশব্দ কবিতা’।...

কাস্টিং কাউচ দেবব্রত দাশ

কাস্টিং কাউচ

জীবনের পরতে পরতেই লুকিয়ে থাকে ছোটো ছোটো গল্প। দৈনন্দিন যাপনের অভ্যেসে তার কিছু আমাদের নজরে আসে, কিছু আসে না। কিন্তু সেই সমস্ত ঘটনার ব্যঞ্জনা কম নয় কোনও অংশেই। তারাই জীবনে প্রতিনিয়ত নতুন মাত্রা যোগ করে। পালটে দেয় গতিপথ। আলো থেকে আঁধারের বাঁকে নিয়ে এসে দাঁড় করায়, তারপর বিমূঢ় জীবনকে আবার ফেরায় আলোর অপেরায়। একজন গল্পকারই এই ব্যঞ্জনাময় ঘটনাগুলিকে একটি লিখিত গল্পের অবয়ব দিতে পারেন। সেখানে থাকে গদ্যের কুশলতা। নির্মাণের দক্ষতা। ছোটোগল্পের পাঠক-প্রত্যাশিত অন্তিমের চমক। তবে সব ছাপিয়ে থাকে এক আবেদন। একধরনের পরমতা যা হাজার ক্লিন্নতা সত্ত্বেও জীবনকে ভালোবাসতে শেখায়। দেবব্রত দাশ গল্প লিখছেন দীর্ঘদিন ধরেই। তাই নির্মাণ পেরিয়ে পাঠকের মনে...

সওদাগরের দোসর সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়

সওদাগরের দোসর

ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের স্বরূপ আমরা ক্রমশ দেখতে পাচ্ছি। রাজনীতি আর বাণিজ্যের গলাগলি নতুন নয়। কে যে কখন কাকে বোড়ে করে রাজার আসন দখল করে, তা সাধারণত অগোচরেই থেকে যায়। ঐতিহাসিকভাবে সত্য এ ধাঁধা। কিন্তু এসব উপর-উপর-জানা কথা, এই বিষয় নিয়ে তথ্যভিত্তিক, বিশ্লেষণমূলক লেখা তেমন নেই। আলাদা করে বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী বা রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বই আছে। কিন্তু সেই বঙ্গভঙ্গ, দেশভাগ থেকে আজ অবধি এই দোস্তির ধারাবাহিক আখ্যান সেভাবে চোখে পড়ে না। বর্ষীয়ান সাংবাদিক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াস সেই অনালোচিত অংশগুলিকেই তুলে ধরা। বঙ্গভঙ্গের সময় কী ছিল বণিকশ্রেণির ভূমিকা? দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগ এক শ্রেণির ব্যবসায়ীকেও কি কুলীন করে তুলল? ইন্দিরা সরকারের আমলে দেশের...

কবির ভয়ের ভেতর প্রতীক

কবির ভয়ের ভেতর

বড়ো নিশ্চিন্ত জমি থেকে আমি কবিতা লিখি।কবুল করার মতো কোনও পাপ নেইশ্লাঘনীয় পুণ্য নেই।আছে শুধু—ঢেঁকুর গোপন করে খিদের গল্প বলা,মিষ্টি জলের শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়েখরাভূমির দুর্দশা বর্ণন,ডিসটেম্পার দেয়ালের কানে উদ্বাস্তুর কান্না তুলে দেওয়া,নিশ্ছিদ্র সংখ্যাগুরু নিরাপত্তায়সংখ্যালঘুর প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন। শঙ্কর মাছের চাবুক নিয়েআমার শিয়রে দাঁড়িয়ে নেই কোনও বিবেক।এমনকি যাত্রাদলের মেনিমুখো বিবেকওবেসুরো গান শুনিয়ে জ্বালায় না কখনও। এহেন নিশ্চিন্ত ভূমি-ই আদপে আক্রান্ত! এহেন নিশ্চিন্ত জমিইই আসলে ক্ষমতার পুষ্টিবর্ধক। যিনি কবি, তিনি এই ভয়ের ভিতর থাকেন। জানেন, এই উদাসীন জমিই আসলে জমি কেড়ে নিচ্ছে বহু সংখ্যক মানুষের। তবু মানবের জাগরণ নেই। সেই ক্লান্তি, পরাভবের ভিতরেই জেগে থাকে কবির স্বর। কিংবা চাবুক। নিঃশব্দের সাধনাতেও তাই...

  • 1
  • 2
  • 6