সব স্বৈরাচারীই কি একলা? প্রশ্নটা করার পরেই মনে হল শ্রীমন্ত নস্কর কি আদৌ স্বৈরাচারী ছিলেন? নাটকের দল ছিল তাঁর। গাঁ-গঞ্জে থিয়েটার করে বেড়াতেন। হঠাৎ একদিন পার্টি থেকে তাঁকে ভোটে দাঁড় করিয়ে দেয়। তখন দেশ জুড়ে অন্য হাওয়া, শ্রীমন্ত এবং তাঁর পার্টির অনেকেই জিতে গেলেন। লেখাপড়া জানার সুবাদে আর থিয়েটার করায় পরিচিত মুখ হওয়ার কারণে তিনিই হলেন তালদা তালদা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তারপর দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পর রাজনীতির নিয়ম মেনে হেরেও গেলেন একদিন। কিন্তু তাঁর দলের বাকিরা থেকেই গেল ক্ষমতায়। পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হলেন শ্রীমন্তর সহযোগী পরান মণ্ডল। তাহলে কি ষড়যন্ত্র করে সরানো হল শ্রীমন্তকে? শ্রীমন্ত ভোটে হেরে
সংসারে মন দিলেও রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরোতে পারবেন কি? তাঁর বড় ছেলে সুভাষ, যে এখন তাঁর থিয়েটার কোম্পানি সামলায়, তার কাছে পরান মণ্ডলের তরফে প্রস্তাব আসে রাজনীতিতে প্রবেশ করার। শ্রীমন্তর ছোট ছেলে বাদল কয়েকদিনের জন্যে ছুটিতে বাড়ি এসে জড়িয়ে পড়ে ঝগড়া-মারপিটে। জনশ্রুতি, তার সঙ্গে যে ছেলেটির ঝামেলা হয়, সেই শাজানের ঘর পুড়িয়েছিল পরান মণ্ডলের লোকজন। বাদলের ফিরে যাওয়ার পরে পরেই খুন হল শাজান। সেই খুনের সঙ্গে কে বা কারা জড়িয়ে?
মানুষের আলো আর অন্ধকার মিশে যে ধূসর এলাকা, সেখান থেকে উঠে আসা একের পর এক কাহিনি-উপকাহিনিতে নিপুণভাবে এক চক্রব্যূহ রচনা করেছেন রাজর্ষি দাশ ভৌমিক। ‘ত্রিস্তর’ উপন্যাসটি তাই কলকাতা বইমেলা ২০১৮-য় সৃষ্টিসুখ প্রকাশনের ক্যাটালগে এক উজ্জ্বলতম সংযোজন হয়ে উঠতে চলেছে।