ফেসবুকে নিয়মিত লেখেন যারা, তাঁদের মধ্যে কাজী ফয়জল নাসের পরিচিত নাম। তাঁর 'বাজে গল্প' সিরিজ আমাদের আটপৌরে জীবন নিয়ে হালকা হাসি, অল্প বিষাদের ডায়েরি। সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে ২০১৮ এর কলকাতা বইমেলায় বই হিসাবে প্রকাশ পেতে চলেছে 'বাজে গল্প'। প্রচ্ছদশিল্পী - সুমিত রায়।
হুক-সৌরভ মিত্র
সৌরভ মিত্রর গল্প সাধারণ মানুষকে নিয়ে। শহরের সীমা থেকে লেখক অনায়াসে পৌঁছে যান প্রত্যন্ত গ্রামে, তাই তাঁর গল্পের বিষয় আকর্ষক এবং বৈচিত্র্যময়। একের পর এক উঠে আসেন মফস্বলের আনস্মার্ট চাকুরে, অনাবাসী ভারতীয়, সহায় সম্বলহীন স্মাগলার, জমি হারানো চোলাই মদবিক্রেতা, মাটির প্রদীপের কারিগর... গল্পগুলোতে মানুষের ভাষা, তাঁদের জীবন সংগ্রাম এতটাই বাস্তব যে, সেগুলোকে গল্প হিসাবে কল্পনা করা কঠিন। আবার একই সঙ্গে অতিলৌকিক দৃশ্য, সূক্ষ্ম প্রতীক এবং ঘটনার নাটকীয়তা এতটাই যথাযথ যে, লেখাগুলোকে সার্থক গল্প হিসাবে মেনে নিতেও কোনও অসুবিধা হয় না। বিভিন্ন সময়ে দেশ, সংবর্তক, শিলাদিত্য, বর্তমান, ঋত্বিক ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত ১৭টি গল্প নিয়ে প্রকাশিত হতে চলেছে সৌরভের গল্প সংকলন...
যৎকিঞ্চিত- রাণা আলম
ক’দিন আগে কলকাতায় একটি পারিবারিক উৎসবে সায়ন্তিকার বাবার সাথে দেখা। আমাকে দেখেই নিমের পাঁচন খাওয়া মুখ করে সোফাতে বসলেন। টিভিতে তখন কোনও একটি সিনেমা চলছিল, যেখানে দুটি ছেলেমেয়ে ভালোবেসে বিয়ে করে অসুখী দাম্পত্যে জড়িয়ে পড়েছে। কফির কাপে চুমুক দিয়ে আমার দিকে ইঙ্গিতপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সায়ন্তিকার বাবা বললেন, “কখনও কখনও এক মুহূর্তের ভুলের ফসল সারাজীবন বইতে হয়, বুঝলে...” আমি সপাটে বললাম, “হ্যাঁ। জলের মতো বুঝলাম।” সায়ন্তিকার বাবা একটু থতমত খেলেন। তারপর অফিসিয়াল স্মার্টনেস বজায় রেখে জিজ্ঞেস করলেন, “কী বুঝলে?” আমি ঠান্ডা গলায় উত্তর দিলাম, “বুঝলাম এই যে, আপনি একমুহূর্তের ভুল করেছিলেন আর সেই ভুলের ফসল হল সায়ন্তিকা যাকে আপনি তেইশ...
গল্প ২৪-অভীক দত্ত
অভীক দত্ত স্মার্ট লেখে, সপাট লেখে। গল্পটাই লেখে। অহেতুক টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা নেই। আর তাই একেবারে সদ্য ইস্কুল পাশ, কলেজপড়ুয়া বা সদ্য চাকরিতে জয়েন করা নওজওয়ানদের কাছে অভীকের জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়। বিদেশ থেকে এক সপ্তার ছুটিতে বাড়ি আসা যুবক গলিঘুঁজি খুঁজে সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে সৃষ্টিসুখের আউটলেটে আসেন অভীকের বই কিনবেন বলে। বা হাইকোর্টে সদ্য প্র্যাকটিসে আসা তরুণী ফোন করে অনুরোধ করেন -- 'ওনার সব বইগুলো আমার চেম্বারে পাঠিয়ে দেবেন প্লিজ? যা লাগে দেব।' ২০১৮ কলকাতা বইমেলায় তাই তামাম পাঠককুলের চাহিদা মাথায় রেখে সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে পার্থপ্রতিম দাসের করা মলাটে অভীকের নতুন দু-ডজন গল্প নিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে 'গল্প ২৪'।
ত্রিস্তর-রাজর্ষি দাশ ভৌমিক
সব স্বৈরাচারীই কি একলা? প্রশ্নটা করার পরেই মনে হল শ্রীমন্ত নস্কর কি আদৌ স্বৈরাচারী ছিলেন? নাটকের দল ছিল তাঁর। গাঁ-গঞ্জে থিয়েটার করে বেড়াতেন। হঠাৎ একদিন পার্টি থেকে তাঁকে ভোটে দাঁড় করিয়ে দেয়। তখন দেশ জুড়ে অন্য হাওয়া, শ্রীমন্ত এবং তাঁর পার্টির অনেকেই জিতে গেলেন। লেখাপড়া জানার সুবাদে আর থিয়েটার করায় পরিচিত মুখ হওয়ার কারণে তিনিই হলেন তালদা তালদা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তারপর দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পর রাজনীতির নিয়ম মেনে হেরেও গেলেন একদিন। কিন্তু তাঁর দলের বাকিরা থেকেই গেল ক্ষমতায়। পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হলেন শ্রীমন্তর সহযোগী পরান মণ্ডল। তাহলে কি ষড়যন্ত্র করে সরানো হল শ্রীমন্তকে? শ্রীমন্ত ভোটে হেরে [caption id="attachment_4085"...
পৃথিবীর বাইরের শহরে-সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়
গাছ আজ তার মাটি আর টব নিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে। আমার মনখারাপ। ওয়াতাশিভা বলছে, ‘আটকিও না’। আটকাচ্ছি না। আমিও আজ জানি, পৃথিবীর যে কোনও স্তরেই কেউ কারও না। অধিকার আসলে একটা মিথ। যে মিথ বা মিথ্যেটা আছে বলেই আমরা কোনো-না-কোনো স্তরে বেঁচে থাকতে পারি। কিন্তু আমি তো ‘সত্যি’ খুঁজতে চেয়েছিলাম, আর তাই... আর কোনও মিথ্যেকে আঁকড়াব না কখনও। গাছ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে... শেষবারের মতো আমি ওকে বুকের আলো দিচ্ছি। শরীরের জল দিচ্ছি। শেষবারের মতো... হাঁ করে... বাতাস দিচ্ছি ওকে। গাছ এইবার হেঁটে যাচ্ছে। পৃথিবীর এত এত গাছের মধ্যে হারিয়ে যাবে ও। ওর কোনও জন্মদাগ নেই। জন্মব্যথা আছে, আর...
আমোদিনীর আরশি-সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়
বাপির যাওয়ার ডাক এল খুব জলদি। যেদিন চলে গেল বাপি, সেদিনই যেন হঠাৎ করে অনেকটা বয়স বেড়ে গেল মামুর। কেবল ঘুরেফিরে মাথা নাড়ে আর বলে, “আমায় ‘গোরাবাবু’ বলে আর কোনোদিন ডাকবে না কেউ!” আমোদিনী চায়ের কাপটা মুড়ির বাটিটা নিয়ে সামনে যায়। এখন তো সে আর ছোটটি নেই। দুজনেই নিঃশব্দে চোখ মোছে। কাজকম্ম মিটিয়ে ফেরার সময় আমোদ মামুর হাত ধরে বলে, “সাবধানে থেকো মামু। তুমি ছাড়া...” মামু ধমকে বলে, “ওসব বলে কাঁদাবি নাকি আবার আমাকে! আমি ঠিক থাকব। তুমি ঠিক থেকো, মা-কে দেখো...” আমোদিনী আশ্বস্ত হয়। মামু তো বলেইছে ঠিক থাকবে। শুধু খেয়াল থাকে না যে কতদিন ঠিক থাকবে সে হিসেব...
সৃষ্টিসুখ-এর ই-বুক অ্যাপ- বাংলা প্রকাশনার ঐতিহাসিক মুহূর্ত
শেষমেশ এসে গেল সৃষ্টিসুখ-এর ই-বুক অ্যাপ। কেউ কেউ বলছেন, এটা একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার। এর আগে কোনও বাংলা প্রকাশনা নাকি তাঁদের বইয়ের ই-বুক সংস্করণ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে উপলভ্য করে তোলেননি। ঐতিহাসিক কিনা জানি না, কিন্তু সৃষ্টিসুখ প্রকাশনের এই মোবাইল অ্যাপ-এর বিটা লঞ্চ আমাদের মতো ছোট প্রকাশনার জন্যে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মুহূর্ত।সৃষ্টিসুখ প্রকাশনের বইগুলির ই-বুক সংস্করণ পড়ার জন্যে এই অ্যাপটি নিচের লিংক থেকে ডাউনলোড করা যাবে। https://play.google.com/store/apps/details…
কেন এই অ্যাপ? পাঠকের কাছে আমাদের বই আরও সহজে পৌঁছে দিতে এই অ্যাপ। আমরা চাই, আপনার হাতের মুঠোয় হাজির হোক আমাদের সমস্ত বই, যে কোনও জায়গায়, যে কোনও সময়। আপাতত অ্যানড্রয়েড অ্যাপ দিয়ে শুরু। কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা আই ও এস অ্যাপ (অ্যাপেল-এর জন্যে) নিয়ে আসব।
কীভাবে বই পড়বেন? মূলত সাবস্ক্রিপশানের মাধ্যমে। এক মাস, তিন মাস আর ছ মাসের সাবস্ক্রিপশান করা যাবে। ২৫টি বই নিয়ে অ্যাপটি শুরু করা হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই যুক্ত হবে বই। কলকাতা বইমেলা ২০১৮-র পর সৃষ্টিসুখ-এর মোট বই হবে ২৩০-এরও ওপরে। আমাদের লক্ষ্য জুন, ২০১৮-র মধ্যে সব বই এই অ্যাপে হাজির করার। গ্রাহক না হতে চাইলেও এক-একটা বই কিনেও পড়তে পারেন। যেমন আপনার ইচ্ছে। তবে ওই যে বলে, দেখাশোনা ফ্রি, কেনাকাটা আপনার ব্যাপার। আপাতত অ্যাপটি কমেন্ট বক্সে দেওয়া লিংক থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতেই পারেন। কয়েকটি বইয়ের প্রিভিউ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। পছন্দ হলে অন্য বইও পেমেন্ট করে পড়তে পারেন।
সৃষ্টিসুখ প্রকাশনের মুদ্রিত বই কি তাহলে আর পাওয়া যাবে না? অবশ্যই পাওয়া যাবে। আমরা নতুন বইয়ের গন্ধ থেকে পাঠকদের বঞ্চিত করতে চাই না। আমরা চাই পাঠকদের কাছে মুদ্রণ আর ইলেকট্রনিক দুটো সুবিধাই থাক। পাঠক বেছে নিন, নিজের মতো করে।
আমরা জানি, আরও অনেক অনেক প্রশ্ন অপেক্ষা করে আছে। যে কোনও জিজ্ঞাসা পাঠাতে পারেন sristisukhprokashan@gmail.com –এ।
বাংলা ই-বুকের জন্যে সৃষ্টিসুখ প্রকাশনের ছোট্ট এই পদক্ষেপে বইপোকার বন্ধুদের পাশে চাই আমরা। অ্যাপটি ইনস্টল করে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানালে বাধিত হব।
বড়দিনের আগাম শুভেচ্ছা বন্ধুদের। সক্কলে ভালো থাকুন। বই পড়া জারি থাক।
মায়াজন্ম-সেলিম মণ্ডল
এঁটো বাসন-কোসন মেজে মা যখন চকচকে থালায় ভাত বাড়ে হে রাষ্ট্র, তখন তোমার কথা না মনে পড়ে, খেটে খাওয়া বাবার কথা বাবা শিল্প বোঝে না বোঝে, আমরা তিন অভুক্ত প্রাণী রাষ্ট্র নামক কোনও কুয়োর ভিতর আটকে আছি আরও অনেক প্রাণীর সাথে ============= সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে কলকাতা বইমেলা ২০১৮-য় প্রকাশ পেতে চলেছে সেলিম মণ্ডলের প্রথম বই 'মায়াজন্ম'। প্রচ্ছদ এঁকেছেন নক্ষত্র সেন।
বউ সিরিজ রিভিউ-সুমন সরকার
অঞ্জন চৌধুরীর বউ সিরিজের বইগুলো দেখেছিলেন? চোখের জলে নাকের জলে নাকানি চোবানি খাওয়া সেইসব ছবির রিভিউ আর সঙ্গে আরও কিছু গদ্য নিয়ে সুমন সরকারের এই বইটা পড়ুন এবার। সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত হতে চলা বইটি পাওয়া যাবে কলকাতা বইমেলা ২০১৮-য়। প্রচ্ছদ এঁকেছেন সুমিত রায়।