তদোগেন গিরতের কবিতা

সব্যসাচী সান্যালের অনুবাদে তদোগেন গিরতের কবিতা।

99.00

2 in stock

SKU: 93-86937-02-5 Categories: , Tag:

Book Details

ISBN

978-93-86937-02-5

Language

Bengali

Published on

January 2018

Publisher

Sristisukh Prokashan LLP

Cover

সুমিত রায়

E-book Version

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.sristisukh.ebook

About The Author

সব্যসাচী সান্যাল

অনুবাদকের জবানি

 

১৯৯৪, আমার তখন ২১। মানুষের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেললাম। ২১ বছর যতটা বিশ্বাস পুষতে পারে আর যতটা হারাতে পারে, ততটাই আর কী। সঞ্জীব, সঞ্জীব ভক্ত গোলগাল ছোট্ট মানুষ মডার্ন বেকারি পেরিয়ে এক ভাড়া ঘরে থাকত। তার একতরফের প্রতিবেশী এক ছুকরি বেলজিয়ান আর অন্যতরফে এক মঙ্গোলবালক। সঞ্জীব, একদিন হাঁফাতে হাঁফাতে এসে অনামিকা বয়েজ হোস্টেলে সত্যর ঘরে সান্ধ্য আড্ডায়, চোখ বিস্ফারিত —“জানো সব্যদা, সমস্ত মঙ্গোলিয়ানদের পাছায় একটা করে নীলদাগ আছে। মঙ্গোল বলল এইমাত্র।” চিনা, জাপানি, কোরিয়ানদেরও তাই। সে দাগ নাকি খোদ তেমুজিনের স্মৃতি, সারা পৃথিবীর তেমুজিনের বংশের উত্তরাধিকার। এরপরও মানুষে বিশ্বাস রাখা যায়? জেনেটিক ডাইলুশান বলেও কি কোনও জিনিস নেই? তো, সেই নাম না-জানা মঙ্গোলের নাম হয়ে গেল নীলদাগ আর করোলারি হিসেবে বেলজিয়ান ছুকরির নাম লালদাগ।

১৯৯৮-এ আমি যখন কোরিয়ায়, তদোগেনের সাথে দেখা। মদ খেতে খেতে ঠাট্টার ছলে বলেই ফেললাম। তদোগেন সিরিয়াসলি বলল, “সে কী, তুমি দেখোনি?” পরের দিন ডর্মিটরির কমিউনাল শাওয়ারে স্নান করতে করতে প্রথমবারের মতো চারিদিকে চোখ বোলালাম। কী আশ্চর্য! সাদা তীব্র স্টেরাইল আলোয় কোথাও সাবানের ফেনা ভেদ করে, কোথাও জলধারা ফুঁড়ে সারি সারি কালসিটের মতো নীলদাগ! সেই আবার মানুষের ওপর বিশ্বাস করতে শিখলাম, ২৫ বছর বয়সে যতটা বিশ্বাস করতে পারা যায় আর কী।

তারপর থেকেই তদোগেনের সাথে একটা সখ্য। মদ, গান, কোরিয়ান রকব্যান্ডের সাথে এখানে সেখানে। তদোগেন মান্দারিন জানে, রাশান জানে, কম্পারেটিভ লিটারেচার পড়তে এসেছিল। কোরিয়ানও শিখে নিয়েছিল। আমার চেয়ে বছর ছয়ের বড় তদোগেন শান্ত, ধীর, মদ খেয়েও চুপ। ‘বুধা’ বলে ডাকত কিম ইয়ং জুন, রকব্যান্ডের রাজা! কবিতা লিখত তদোগেন, কোনোদিন শুনিনি, ইংরেজি জানত না। কোরিয়ান ভাষায় কবিতা বোঝার এলেম আমার ছিল না। ২০০২-এ যখন সে দেশ ছাড়ি, তদোগেন তখনও কোরিয়ায়। আর তারপর জীবন। ১৩ বছর পর, ২০১৫-য় ইয়ং জুন-এর কাছ থেকে মেল অ্যাড্রেস নিয়ে যোগাযোগ করে তদোগেন। তদোগেন এখন উলান বাটোর থেকে পুবে ওন্দোরহান শহরে ইউনিভার্সিটিতে পড়ায়। অ্যাদ্দিনে সে ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে তার মঙ্গোল কবিতা অনুবাদ করে আমায় পাঠায় আর আমি তাকে বাংলায় তুলে আনি। এ এমন একটা সময় যখন মানুষের ওপর বিশ্বাস রাখব কি রাখব না — এই দ্বিধা নিয়েই দিন কাটে।

 

সব্যসাচী সান্যাল