বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে বাংলায় লেখা জনপ্রিয় রচনাগুলির জন্য ড. সিদ্ধার্থ মজুমদার ইতিমধ্যেই সব ধরনের পাঠকদের কাছে সমাদৃত। দীর্ঘকাল ধরে নিরলস ভাবে এই কাজ করে চলেছেন তিনি। তাঁর লেখা গ্রহণযোগ্যতার পেছনে মূলত দুটি কারণ – লেখকের চিন্তার স্বচ্ছতা ও ভাষার প্রাঞ্জলতা। বইয়ের মুখবন্ধে বিষয়বস্তু নির্বাচন এবং পর্ববিন্যাস বিষয়ে তিনি সযুক্তি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবে লেখকের পরিচয় নিয়ে কোনো উল্লেখ চোখে পড়েনি । সিদ্ধার্থর তরুণ বয়স থেকেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় ও সুদীর্ঘ সংযোগ এবং তাঁর লেখালেখি সম্পর্কে অবগত থাকার সুবাদে এখানে দু’এক কথা বললে, তা হয়ত ধৃষ্টতা হবে না। সিদ্ধার্থর পূর্বরচিত গ্রন্থগুলির সঙ্গে যাঁদের পরিচয় আছে তাঁরা জানেন, রচনাগুলি বিজ্ঞান ও সাহিত্যের মেলবন্ধনে সৃষ্ট এক নতুন ধারার গদ্য। যেখানে একই সঙ্গে মিশে থাকে বিজ্ঞান গবেষণার মৌলিক তথ্যাদি আর সাহিত্য ও শিল্পকলার অভিনব যুগলবন্দী উচ্চারণ। এছাড়াও সোশাল মিডিয়ায় তাঁর সনিষ্ঠ রচনাগুলির কথা উল্লেখ্য। অনেকের মতন আমার কাছেও যেগুলি বিশেষ প্রাপ্তি। বলা বাহুল্য, তাঁর এইসব লেখা বিজ্ঞান প্রসারের ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। অপর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল – লেখকের অসাধারণ সময়চেতনা ও ইতিহাসমনস্কতা। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী সম্পর্কিত লেখায় স্থান ও কাল বিচার। বিজ্ঞানী কতখানি তাঁর সময়ের সৃষ্ট, সমকালকে তিনি প্রতিভার দ্বারা অতিক্রম করতে পেরেছেন কিনা – এর সদুত্তর পাওয়া সহজ নয়। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিজ্ঞানীর প্রতিভা, অসাধারণত্ব, এ সব কিছুর সঙ্গে বিজ্ঞানীর মানবিক অস্তিত্বের প্রতি লেখকের দৃষ্টিপাত, মহিলা বিজ্ঞানীদের অবদানের অস্বীকৃতি ও বঞ্চনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে লেখক আমাদের বিশেষ ধন্যবাদার্হ হয়েছেন। এই সব কিছুর সমন্বয়ে সিদ্ধার্থর এই বইয়ের রচনাগুলি সবার অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করবে।
ড. রীণা ভাদুড়ী
সচিব, আশুতোষ মুখার্জী মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউট
Be the first to review “আলোকসাগর পারে”