মাসুদ বড়ার দ্বিতীয় কবিতা সংকলন ‘শীতল সহ্যের আয়ু’ । বইটির নির্বাচিত দুটি কবিতা।
কয়েক মাইল দূরে
যে শহরে দুটো পায়ের ছাপ
কিছুটা জায়গা নিয়ে ধীরে ধীরে দৃঢ় হতে থাকে
তার সকালে রাতজাগা কালশিটেগুলো বড্ড
অভিনয় জানে,তবু লেগে থাকে কামড়ের যন্ত্রণা
যার আর্তনাদে থতোমতো পাতায় যত কাটাকুটি,
আমার সামনে কোনও খুঁটি ছিল না
শুধু একহাঁটু জল যাকে এখনও পেরোতে পারিনি।
একই মোড়ে বারবার ছুঁয়ে দেখা দৃষ্টিতে
ভিজেছে কিছুটা ভয়, কেটেছে গ্লানি,
অতঃপর আমি ঘরছাড়া হলাম
এখন চোখে মুখে কোনও ক্লান্তি নেই
আগলে রাখার তীব্র আসক্তি বিঁধছে আমায়।
তবুও কেউ ভুলে যাবে অস্তিত্বের কথা
তখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনব আমি
শ্রদ্ধা ভালোবাসা বুকে নিয়ে পরিণত যত উপলব্ধি,
রাতজাগা কালশিটেগুলো তখনও অভিনয় করবে
তোমরা বুঝবে না আমায়, হেসে উঠবে দুটো শুষ্ক ঠোঁট।
বৃষ্টির দিন সংক্রান্ত
পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকো চেয়ারে,
বৃষ্টির কান্না শুনতে শুনতে সমব্যথী হয়ে
উপড়ে ফ্যালো শিকড়,
কষ্টের যত ডালপালা পুড়ে যাক।
তবে ঘুমিয়ে পড়ার আগে মন শান্ত করে নিয়ো
যেভাবে মাছেরা জলে থাকে,
কেন-না তারপর নেমে আসবে চরম শান্তির ঘুম
স্বপ্নে ধেয়ে আসবে কালো মেঘের মতো
অন্ধকার জটিলতা,
অজস্র প্রশ্ন ছিঁড়ে খাবে তোমার বোধবুদ্ধি, আবেগ।
ছটফট করবে ভয়ে, হাত পা ছুড়তে চাইবে
তবু পাশ ফিরে শুতে পারবে না তুমি।
হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও চিনতে পারবে না
নিজেকে,
প্রবল অস্বস্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
আসলে তুমি ভুলে গেছ নিজেকেই
অতীতের কষ্টগুলো বহুকাল ধরে দিব্যি পরজীবী হয়ে সংসার করছে
তোমার সুখে।
এরকম বৃষ্টির দিন নিশ্চিত আবারও আসবে
তখনও বৃষ্টির কান্না শুনতে পাবে,
শুধু একটু মুচকি হেসে একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে চোখ আটকে
রেখো ডায়রির পরের পাতায়।
Be the first to review “শীতল সহ্যের আয়ু”