সহজ কথা লিখতে আমায় কহ যে
সহজ কথা যায় না লেখা সহজে
এ-স্বীকারোক্তি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের। নির্মাল্য সেনগুপ্তের লেখার মস্ত গুণ এই যে, তিনি ওই সহজ কথাটি সহজে বলার আন্তরিক চেষ্টা করেন। কবিতায়। এবং, তিনি অনেকাংশেই সফল। ভণিতাহীন তাঁর কবিতার আয়োজন। এ-সমাজের ত্রুটি-বিচ্যুতির হাঁ-মুখগুলো আমাদের অনেকের মতো তাঁরও চোখে পড়ে। কিন্তু যেখানে নির্মাল্যর ম্যাজিক শুরু হয়, সেখানে আমরা, পাঠকরা, বেশ বিভ্রমে পড়ে যাই। কারণ যা-কিছু বলার, নির্মাল্য তা বলেন প্রবল কৌতুকে। যে সমাজ ও কাঠামো নিজেই বাঁকাচোরা, তোবড়ানো হওয়া সত্ত্বেও আমাদের অহরহ ভেংচে চলেছে, আমাদের সামান্য বেঁচে থাকাকে বিপর্যস্ত করতে যে কিনা সিদ্ধহস্ত, তার প্রতি আঙুল তোলার জন্য প্রায়শই পালটা ভেঙানোর পথই বেছে নিয়েছেন কবি। শব্দের প্রয়োগ, প্যারোডির আড়াল তাঁর অস্ত্র। আর তার মধ্যে মধ্যেই তিনি লুকিয়ে রাখেন তাঁর চাবুক। মাপা ছন্দের বিহ্ববলতা আর হালকা হাসির রেশটুকু ফুরালে আমরা উপলব্ধি করি, এ-আসলে এমন এক সুকুমারীয় কৌতুক, যা কেবল হাসায় না, গভীরে ভাবিয়ে তোলে, শিহরিত করে, ভাবতে বাধ্য করে। নির্মাল্যর লেখা অনেকটা সে-পথ ধরেই চলেছে। অনেকেই তাঁর লেখার গুণমুগ্ধ। পাঠক, আসুন আরো-একবার এ-পরিক্রমায় অংশ নিই।
Be the first to review “থার্ড রেল”