বইয়ের ভূমিকায় শ্রীজাত লিখেছেন, “বাঙালির সৃজনশীল আড্ডা যে নিভে আসছে একে একে, এমন আক্ষেপ বা অভিযোগ ইদানীং শোনা যায়। আর সে নেহাত ভ্রান্ত নয়। যে-ধরনের আড্ডায় এক সময়ে বাঙালির ভাবনা রীতিমতো পুষ্ট হয়েছে, যেসব আড্ডা থেকে একদিন উঠে এসেছে কত-না চর্চার অভিমুখ, তেমনটা আজ বিরল বললে ভুল হবে না হয়তো। তারই মধ্যে বাতিঘর হয়ে হাতে-গোনা যে-কয়েকখানা ঐতিহ্যবাহী আড্ডামহল এখনও সেজে ওঠে, তাদের মাঝে শ্রী শঙ্খ ঘোষের বাড়ির রোববারের আড্ডা তুলনারহিত।
“আমাদেরই সুহৃদ সৌমেন সে-আড্ডার বাঁধা সদস্য। এবং সে চুপিচুপি একখানা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে। এই রোববারদের সে ধরেবেঁধে বন্দি করেছে দুই মলাটের মধ্যে। কাজ নেহাত সহজ ছিল না। আড্ডার গতিবিধিকে লিপিবদ্ধ করা, সে ভারী দুষ্কর। তবে এও ঠিক যে, কেউ একজন এমন কঠিন কাজে হাত না দিলে এ-ধরনের বিরল অভিজ্ঞতারাশি শেষমেশ কেবল কয়েকজনের স্মৃতিতেই থেকে যায়। সৌমেন বড় যত্নে তাদের নিয়ে এসেছে বইয়ের পাতায়। কেবল আমাদের জন্যই নয়, প্রত্যেক পাঠকের কাছেই এ এক অভাবনীয় সুখবর বৈকি। বিরল এই বাতিঘরের ছবি তুলে রাখার জন্য সৌমেনকে জানাই অনেক কৃতজ্ঞতা, ভালবাসা। আমরা যে শঙ্খ ঘোষকে চাক্ষুষ করেছি, শুনেছি তাঁর কথাদের, আসতে পেরেছি তাঁর নিকট পরিসরের কোথাও, এ-গ্রন্থ তার সাক্ষ্য দেবে চিরকাল। সেই বা কম পাওয়া কী।”
Be the first to review “শঙ্খবাবুর সঙ্গে”