চার্লি ম্যাকেশির ‘দ্য বয়, দ্য মোল, দ্য ফক্স এন্ড দ্য হর্স’ বইটি পড়ে ইচ্ছে হয়েছিল এইরকম একটা বই যেন একখানা আমাদের ভাষাতেও হয়। এই বইখানা থেকে এই বইয়ের ধারণা পেয়েছি। ফলে স্বীকার করে নিচ্ছি যে, এই বইয়ের মৌলিক ধারণা আমার নয়। সেদিক থেকে এই বইখানাকে যদি কেউ ম্যাকেশির বই থেকে অনুপ্রাণিত ভাবেন, তাঁকে আমি বাধা দেব না। কিন্তু বইয়ের ভিতরের সমস্ত কথা আমার নিজের। সেই সমস্ত নীরবতা মাখানো ঘটনাবলি কীভাবে এগিয়ে যেতে পারে, তার ধারণাও কিন্তু ম্যাকেশির বইখানা থেকে পেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম এমন একটি বই হোক যা তিরিশ মিনিটে শেষ হতে পারে, কিন্তু শেষ যেন কোনোদিনই না হয়৷ ম্যাকেশির বইটা অন্তত এইরকমই। এই বইটা কেমন হবে তা যাঁরা বইখানার পাতা ওলটাবেন, তাঁরা জানবেন। বইটার ধারণা আসলে তো বন্ধুত্বেরই ধারণা, বন্ধুত্বেরই উদ্যাপন। ফলে এই বই লেখার সময় আমি আমার প্রিয় বন্ধুদের ভেবেছি সবচে বেশি করে। পাঠকরাও যদি তা-ই ভাবেন, তাহলেই হয়তো আমাদের পরিশ্রম সার্থক।
বইটি যেমন আমার, তেমনই সুমনের। সুমন কবিরাজ। আমার অন্যতম প্রিয় শিল্পী সুমন। এই সময়ে যাঁদের ছবি আমাদের ভাবায়, সুমন তাঁদের একজন। বইখানায় সুমনের কাজ নিশ্চয়ই পাঠকের ভালো লাগবে। সুমন এই বইয়ের আরও একজন কনট্রিবিউটর। ফলে তাঁকে ধন্যবাদ দেওয়ারও কোনও মানে নেই।
এই বইখানা লিখে রেখে দিয়েছিলাম এই ভেবে যে, বইটা প্রকাশ করা এত ব্যয়বহুল যে কেউ প্রকাশের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবেন না। কিন্তু এবারেও আশ্চর্য হতে হল! বইটার পাণ্ডুলিপি পড়ে সৃষ্টিসুখের রোহণ কুদ্দুস একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন! এই রকম বই প্রকাশ করাটা ছিল আমার কাছে স্বপ্নের মতো। সেই স্বপ্ন যে এভাবে সত্যি হয়ে যাবে, বুঝতে পারিনি। তাঁকে আমার কৃতজ্ঞতা।
শেষে আমি যাঁর অনুরাগী এমন এক ভাই আর বন্ধুর নাম করতে চাই। এই বইয়ের ব্যাপারে তাঁর কৃতিত্বই সর্বাধিক। অনির্বাণ ভট্টাচার্য সত্যিই আমার কাছে এক আশ্চর্য মানুষ। তাঁকে পড়ে আমি প্রতিদিন যেমন শিক্ষিত হই, তেমনই নতুন বইয়ের উপাদান পাওয়া যায়। একদিন ম্যাকেশির বইয়ের সন্ধান তাঁর কাছে থেকেই পেয়েছিলাম। ফলে তাঁকেই পাণ্ডুলিপি তৈরি করে প্রথম পড়াই। সেটা ওঁর এত ভালো লেগে যায় যে, অনির্বাণ নিজেই আমার হয়ে প্রকাশককে বইয়ের প্রস্তাবটা দেন। সত্যিই এই বই সবদিক থেকে অনির্বাণেরও বই। ও না থাকলে এই বই হতই না। অনির্বাণকে ধন্যবাদ নয়, আমার অন্তরের ভালোবাসা জানাই।
সবশেষে আমার জীবনে যত বন্ধু এসেছেন, তাঁদের সবাইকে আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণে অকারণে আমার জীবনে তাঁরা যে মাধুরী দান করেছেন, তার ফলাফল হিসাবে এই বই গড়ে উঠেছে। কোনোভাবেই তাঁদের ভালোবাসার ঋণ আমি প্রকাশ করতে পারব না।
কুন্তল মুখোপাধ্যায়
Be the first to review “লেংচু টুঁইটুঁই সান্টা আর বাবুই”