লিখতে কোনোদিনই ভালো লাগেনি। লেখক হতে চাইনি কখনও। তার পরেও অনেকানেক লেখা লিখেছি, তা মূলত নানাজনের উপরোধে। সেই লিটল ম্যাগাজিনের আঁতুড়ঘর থেকে আজ পর্যন্ত। নিজে থেকে একটি লেখাও লিখিনি। আজ পর্যন্ত যা লিখেছি সবই কোনও না কোনও পত্র-পত্রিকায় বা বইয়ে সংকলিত হয়েছে। তবে কী লিখব আর কী লিখব না, সে বিষয়ে আমার সম্পাদক ভাই-বন্ধুরা প্রায় সকলেই কমবেশি অবহিত। শুধু যে বিচ্ছিন্ন কিছু লেখা লিখেছি তা নয়। লম্বা লম্বা ধারাবাহিক লিখেছি একটার পর একটা। তার কিছু সংকলিত হয়েছে, কিছু হয়নি। তেমনই এক ধারাবাহিক হল ‘পাগলের সঙ্গে যাবি’।
ভাইবন্ধু কবি-গদ্যকার অর্ক দেব তাদের ওয়েব ম্যাগাজিন ‘ইনসক্রিপ্ট’-এর জন্যে একটি ধারাবাহিক লিখতে বলে। অর্ক বলেছিল, আমার বেমক্কা জীবনের পরিচিত মানুষজন ও এই অধমের খ্যাপাটে পরিসর নিয়ে খণ্ডগল্পের ধারাবাহিক কলমকথা লিখতে হবে। আজকের বিশ্বজোড়া সংযোগ-বিপর্যয় ও সমকালীন আত্মবিস্মৃতির প্রবাহে এমন লেখা যে কোনও কলমচিকে এক চ্যালেঞ্জের সামনে ঠেলে দেবে, আমি নিশ্চিত। যখন প্রকৃতপক্ষে বাঙালি পাঠকের সংখ্যা মারাত্মকভাবে তলানিতে ঠেকেছে! তো যাই হোক, প্রতি রবিবার আমার মতো অকিঞ্চিৎকর কলমধারীকে যে অর্ক জায়গা দিয়েছে তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকলাম প্রথা মেনে। ভালোবাসার মানুষ অর্ক সম্পর্কে এছাড়া আর কী-ই বা লিখতে পারি!
এই লেখাগুলি প্রকাশের সাথে সাথে আরেক ভাই-বন্ধু কবি চিত্রশিল্পী ও নকশাকার এবং পরিকল্পক শমিত রায়ের সাথে আলোচনার ফসল হিসেবে উঠে এসেছে এই বইয়ে মুদ্রিত সাদাকালো ছবিগুলি। শমিত কোনও অলঙ্করণের চেষ্টা করেনি। প্রতিটি লেখার সঙ্গে ওর মনোভাবের ছবি এঁকেছে। ইংরেজিতে যাকে বলে কনফ্রন্ট করেছে। আর ওর প্রচ্ছদ নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন দেখি না। কেননা এই বইয়ের পরিকল্পক হিসেবে আগাগোড়াই ওর মনন কাজ করেছে। বাকিটা গ্রাহকদের ওপর ছেড়ে দিলাম। সৃষ্টিসুখের কর্ণধার রোহণ কুদ্দুস এই বই প্রকাশ করতে রাজি হয়ে আমার ও শমিতের একান্ত কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
পরিশেষে বলি, যে কোনও লেখা লিখতে গিয়ে যার কাছে সবসময় সাহায্য পেয়েছি সেই সহযোগী কমরেড চিত্রপরিচালক স্বাতী চক্রবর্তীকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা।
গল্পকার সৌরভ নীল বইটির ক্ষেত্রে ফাইনাল প্রুফ দেখে অযুত সাহায্য করেছে। ওর জন্যও রইল ভালোবাসা।
— ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়
Be the first to review “পাগলের সঙ্গে যাবি”