এটি কিন্তু তপন সিংহের জীবন-আলেখ্য নয়। ওঁর চলচ্চিত্র জীবনের ধারাবাহিকতা থেকে উঠে এসেছে কিছু মাইল-ফলক, যা তাঁর শৈল্পিক, কল্পনাপ্রসূত ও সাহিত্যভাবনাকে নানাভাবে পর্দার বুকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এই রচনা-সংকলনের দ্বারা, লেখক পাঠকের চলচ্চিত্র-চেতনা, চলচ্চিত্রভাবনা এবং চলচ্চিত্র-দর্শনকে একটি নতুন স্তরে নিয়ে যেতে পেরেছেন।
এই বইটির পরিচ্ছেদের বিভক্তি যথেষ্ট কৌতূহলের বিষয়। নাম করে বলতে হলে, বিভক্তিটি এইরকম — ১. নিবন্ধের নেপথ্যকথা, ২. মার্ক্সবাদের মুখোশ ও তপন সিংহের সমাজবীক্ষা: বঙ্গীয় সমকালের জলছবি, ৩. জীবনবোধে রবীন্দ্রনাথ: তপন সিংহের ছবিতে, ৪. তপন সিংহের যুবদর্শন: উত্তরাধিকার থেকে উত্তরণে, ৫. জীবনের প্রতিবন্ধকতা জীবনীশক্তির আরোহণ: তপন সিংহের প্রতিবন্ধী চরিত্রদের চর্যায় এবং ৬. তপন সিংহ আজীবন: চলচ্চিত্র-ভাবনা ও বিবর্তন।
… লেখক তাঁর ভাষা, তথ্য ও বিশ্লেষণের সাহায্যে তপন সিংহের জীবন, চলচ্চিত্র-দর্শন সুন্দর ও গভীরতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। প্রতিবন্ধী মানুষ কী দৃঢ়তার এবং একাগ্রতার সঙ্গে প্রতিবন্ধকতার থেকে উত্তীর্ণ হয়ে বৃহত্তর জীবনবোধে পৌঁছে যেতে পারেন, তপন সিংহের ছবির বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে আবেশ কুমার দাস-এর রচনায়। যে আলোচনা আমরা কোনওদিনই পাইনি, তাও আছে ‘মার্ক্সবাদের মুখোশ’ পরিচ্ছেদে।
বলা বাহুল্য, এই রচনা-সংকলনটি বাংলা চলচ্চিত্রর ইতিহাস ও চিন্তাধারা — দুটিকেই ঋদ্ধ করবে।
— সোমা এ. চট্টোপাধ্যায়
Be the first to review “তপন সিংহ – সার্বিক চলচ্চিত্র বীক্ষা”