দুনিয়া জুড়ে বয়ে যাওয়া #MeToo হাওয়া জানান দিচ্ছে দেওয়ালটা ভেঙেছে, ভাঙছে… এই সময় প্রকাশিত হতে চলেছে এমন এক বই, যা নারীর নিজস্ব কথন বুকে ধরে জন্ম নিচ্ছে। ঈশা দেব পালের সম্পাদনায় এ বইয়ের নাম ‘প্রমীলা পুরাণ’। শৈশব থেকে কিশোরীবেলা হয়ে যুবতী হয়ে ওঠার পথে একজন মেয়েকে আমাদের এই চেনা সমাজে পদে পদে ছোট ছোট নিষেধের যে সমস্ত ডোরে বাঁধা পড়তে হয়, আর তা অতিক্রমণে যে সংঘাত, যন্ত্রণা, গোপন রক্তক্ষরণ অথবা মেনে নিতে বাধ্য হয়ে দাঁতে দাঁত, ঠোঁট চেপে ধরা– সেই রাগ-কষ্ট-ঘেন্না-দুঃখ-অভিমানে বুক ভার হয়ে আসা কথন যেমন এ বইয়ের স্বাক্ষর, তেমনই আছে আলো ছড়ানো অনুভূতিমালাও।
এরপর পদার্পণ কাজের পৃথিবীতে। সেখানেও নানা চেনা ছকের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই। সেখানেও সমান অধিকারের জন্যে সংগ্রাম। এবং অবশেষে প্রতিষ্ঠা। অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই যে স্বাধীনতার কবচকুণ্ডল, সেই উপলব্ধিতে ক্রমশ পৌঁছতে পারেন পাঠক। এ বইতে বিধৃত হয়েছে এমন সব কিছু অভিজ্ঞতা যা জানিয়ে দিচ্ছে, কোন কোন প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একজন নারীকে এগোতে হয় সাফল্যের দিকে। সেইসব সত্য অস্বস্তির হলেও, অস্বীকারের নয়। বরং এই খোলাখুলি স্বীকারেই বিস্তৃত হয় প্রতিবাদের আকাশ। এ বইতে তাই অভিজ্ঞতার ঝাঁপি উজাড় করে দিয়েছেন সত্যবতী গিরি, সুমিতা চক্রবর্তী, তৃপ্তি সান্ত্রা, বল্লরী সেন, যশোধরা রায়চৌধুরী, সফিউন্নিসা, তন্বী হালদার, তৃষ্ণা বসাক, পাপিয়া ভট্টাচার্য, শাশ্বতী নন্দী প্রমুখ লেখকরা। মেয়েবেলা ও কর্মজীবন– এই দুই পর্বে বিন্যস্ত এই ‘প্রমীলা পুরাণ’ আক্ষরিক অর্থেই এ সমাজের অন্তর-পুরাণ।
বইটি সম্পর্কে ‘এই সময়’ দৈনিকে প্রকাশিত আলোচনা –
Be the first to review “প্রমীলা পুরাণ”