“…থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির কথাই ধরি। এডিংটনকে একবার লুডভিগ সিলভারস্টাইন প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বিশ্বে নাকি মাত্র তিনজন এটা বোঝেন?’ অনেক ভেবে এডিংটন বললেন, ‘আসলে আমি ভাবছি তৃতীয় জনটা কে?’ আবার ধরুন ম্যাক্সওয়েলের থিয়োরি। পড়তে গেলে শুরুতেই কাপা, ল্যামডা, আলফায় সজ্জিত হয়ে গোদা একটা সমীকরণ পথ আটকে দাঁড়ায়। সে ভেদ করে ভিতরে ঢোকে কার সাধ্যি! হকিং যখন ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম লিখেছিলেন, শুরুতে নাকি সব অঙ্ক আর সমীকরণ দিয়ে ঠেসে দিয়েছিলেন। প্রথম খসড়া দেখে তাঁর প্রকাশকের চোখ কপালে। ‘করেছেন কী স্যার? এ বই লোকে পাতা উলটেই আবার রেখে দেবে। সমীকরণ কমান।’ কমাতে কমাতে এমন দশা হল, ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়। শেষে নাকি প্রকাশকের আপত্তি সত্ত্বেও হকিং একটা সমীকরণ রেখেই দিয়েছিলেন। বলেছিলেন এটা না দিলে বই লেখার মানেই হয় না। গোটা বই এই একটা সমীকরণে লুকানো। কোন সমীকরণ? E= mc2
পেশায় শিক্ষক অর্পণ ঠিক ওই কাজটাই করেছেন। বিখ্যাত বা অখ্যাত বিজ্ঞানীদের কথা, অজানা গল্প, অচেনা দিক তুলে ধরেছেন দারুণভাবে। আর্যভট্ট, আল খোয়ারিজামির পাশাপাশিই আছেন মারি কুরি, লিজা মেইটনার, মারিও মিশেলরা। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের সঙ্গে দিব্যি জায়গাভাগ করে নিয়েছেন মেঘনাদ সাহা। আছে অদ্ভুত কণা নিউট্রিনো, বোর-আইনস্টাইন বিতর্ক কিংবা বিগ ব্যাং-এর গল্প। জানি, আমাদের রোজকার ডাল-ভাত, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের জীবন আর পেঁয়াজের দামে এসবের কোনও গুরুত্ব নেই, তবু এই লেখাগুলো আপনার মনে অদ্ভুত এক জিজ্ঞাসার জন্ম দেবে। আর হয়তো আপনি প্রাণিত হবেন আরও একটু, আরও একটু জানার জন্য।”
অর্পণ পালের বিজ্ঞানচর্চার সেকাল একাল-এর ভূমিকাতে বইটা সম্পর্কে বিজ্ঞানী এবং লেখক কৌশিক মজুমদার এমনটাই বলেছেন।
Be the first to review “বিজ্ঞানচর্চার সেকাল একাল”