মাধুরীর টুকটাক লেখা আমি পড়েছি ফেসবুকে। কিন্তু তাতে মাধুরীকে আমি ততটুকু বুঝিনি, যতটুকুতে তার সেই সংবেদনশীলতাটাকে আমি বুঝতে পারি, স্পর্শ করতে পারি। তবে সেই সুযোগ হয়েছে ব্যক্তি মাধুরীর সঙ্গে পরিচয়ের পর। তার যে ভাবনা, সেই ভাবনার সঙ্গে আমার জানাশোনাটা তখন। সেখানে সে ধবধবে সাদা খাতার পাতার মতন। যেখানে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম আঁচড়ও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। একজন সংবেদনশীল মানুষের খুব বড় পরিচয় যেটি। যে অনুভূতির সূক্ষ্ম স্পর্শ যেমন ধারণ করে, তেমনি তীব্রতাও।
তারপর হুট করেই পড়া বাসে তার সহযাত্রী এক সদ্য কিশোরী মেয়ের সেফটিপিনে প্রতিরোধের গল্প। কীসের বিরুদ্ধে সেই প্রতিরোধ? পুরুষতন্ত্র? নাকি বিকৃতির বিরুদ্ধে? নাকি খোদ সিস্টেমের বিরুদ্ধেই?
আমি ঠিক জানি না, কিন্তু একটা সেফটিপিন অমন শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে, অমন নুইয়ে দিতে পারে এক ধর্ষকামীকে, অমন ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা জাগিয়ে তুলতে পারে আবার অন্য এক পুরুষেরই, এটি খুব ভাবনা জাগানিয়া। ওই সূক্ষ্ম পিনটুকু কী স্থূলভাবেই না চোখে আঙুল ঠেসে দিয়ে বলে, এইবেলা জেগে উঠবার, রুখে দাঁড়াবার, দিন বদলাবার।
বদল তো আর এমনিতে হয় না, আগে ভাবনায়, তারপর অনুশীলনে। মাধুরীর লেখাগুলোও আগে তার ভাবনা, তারপর তা হয়ে ওঠে প্রাত্যহিক প্রতিবাদ, প্রতিরোধের। আর সেইসব ছড়িয়ে যায় জীবনে।
মাধুরীর ‘ব্যাংকওয়ালি ম্যাডাম’ তাই হয়ে ওঠে সময়ের শাণিত সমরাস্ত্র!
সাদাত হোসাইন
লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা
বাংলাদেশ
Be the first to review “ব্যাংকওয়ালি ম্যাডাম”