হস্টেলে না থাকলে জীবন অধরা থেকে যেত। অধুরাও। ক্যাম্পাসের বৃষ্টির শব্দ, ভিজে ভিজে গাছ, ঝিলের জল, এসির গুঞ্জন, গান্ধীভবনের সিঁড়ি, ইনডোর স্টেডিয়াম মাথার মধ্যে ঘোরে। আমাদের ছিল এসব? আমাদের? এই আমরাই আর্টস ফ্যাকাল্টির সিঁড়ি বেয়ে দুপদাপ করে উঠে যেতাম? পেছনে হয়তো নীরবে, মাথা নিচু করে হেঁটে আসছেন শঙ্খ ঘোষ। উজ্জ্বল লাল কটকি শাড়িতে দু-তিনটে ব্যাগ আর খাতার বান্ডিল নিয়ে দৌড়োচ্ছেন নবনীতাদি। নীল সম্বলপুরি শাড়ি বা ব্ল্যাক ট্রাউজার পরে চার নম্বর গেট দিয়ে সোনালি চুল উড়িয়ে ঢুকছেন কিটি দত্ত। ফুচকার টক টক গন্ধে লবির সামনেটা মাতোয়ারা। কারা বসে আছে ঝিলের পাড়ে?
কারা হস্টেলে রাত জেগে পড়ে? রাত বারোটা পর্যন্ত কোনও না কোনও ঘরে আড্ডা মেরে, চুল বেঁধে, মুখে ক্রিম ঘষে বই খুলে বসত কারা? কারা ভর সন্ধেবেলা একপেট ফুচকা খেয়ে ফেলত বসুশ্রীতে মিস্টার নটবরলাল দেখে? তারাই বুঝি আবার ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়ে বোদ্ধার মতো মুখ করে মাথা নাড়ত? হামাগুড়ি দিয়ে বই খুঁজত শেষ বইমেলায়! তাদের মাথায় গুচ্ছ গুচ্ছ কালো চুল, চিকণ ত্বকে তারুণ্যের আভা চিকচিক করত! কোথায় গেল সেইসব উজ্জ্বল একঝাঁক পায়রা? এই আমরা না তারা? তারা কি আমরা? না আমরাই তারা?
Be the first to review “হস্টেলের দিন”