-
-
-
-
-
রোদপোড়া / মসিউর রহমান
মালতী, সাবিনা আর সালমা। তিন কিশোরী; তিন বন্ধু। প্রচলিত ধর্মাচরণের দিক থেকে তাদের জীবনে কিছু ফারাক আছে। সে-কথা তারা বোঝে; মেনে চলে,ঠাট্টা করে আবার দরকারে এসব গোঁড়ামি পেরতেও পারে। পার্থক্য আছে তাদের সামাজিক এবং শ্রেণিগত অবস্থানেও। কিন্তু বন্ধুতা এ সবের তোয়াক্কা করে না; মাথা ঘামায় না এই বাহ্যিক প্রভেদে। সেখানে যা কিছু ব্যক্তিগত, যা প্রাধান্য পায়, তাই-ই আসলে মানবিক অনুভূতিসমূহ। এই জায়গা থেকেই তিন কিশোরীর গল্প বলতে শুরু করেন মসিউর রহমান। ক্রমশ সেখানে গ্রামজীবনের বিচিত্র রূপ, রাজনীতি ফুটে উঠতে থাকে। আর পাশাপাশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই সামগ্রিকের নিরিখে নারীদের অবস্থা ও অবস্থান। জীবন যত এগোয়, মালতী, সাবিনা, সালমাদের কী পরিণতি হয়? সকালের নরম রোদের মতোই কি মিঠে আঁচ লেগে থাকে তিন বন্ধুর জীবনে? নাকি মধ্যাহ্নের খরতাপে জীবন সেঁকে নিতে নিতেই বেঁচে থাকে তারা? এই উপন্যাস সেই গল্প বলতে বলতেই চিনিয়ে দেয় বাংলার গ্রামসমাজকে।
প্রচ্ছদ – অভিব্রত সরকার
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
স্পর্ধা
গত বছরের একটা সময়ে, আমরা খুব রেগে গিয়েছিলাম। রেগে যাওয়ারই তো কথা। রাতের অন্ধকারে একটা মেয়েকে যদি মেরে ফেলা যায় চুপিচুপি, আর তারপর চোখে পড়ে সেই হত্যার সমস্ত নিশান লোপাট করার তুমুল চেষ্টা, তবে বেঁচে থাকা মানুষগুলো খুব করে রেগে উঠবে, এ-ই তো স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাভাবিকের সংজ্ঞা বদলে গেছে বহুকাল। ‘যা হচ্ছে তা হোক গে’ বলে দশটা-পাঁচটার রুটিনে গা ভাসানো বহুদিন ধরে আমাদের ‘নিউ নর্মাল’। কিন্তু এইবারটা ঠিক সে নিয়মে চলেনি। অন্তত সবার বেলায় নয়। একটা ধর্ষণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মনে পড়েছে আগেরটার কথা। আগের আগেরটার কথা। টান পড়েছে আমাদের সমস্ত জমিয়ে রাখা, সেরে ওঠা কিংবা না ওঠা ক্ষতে। রাজনীতি, সমাজ আর মনোগহিনের সদর অন্দর জুড়ে ওৎ পেতে থাকা অন্ধকারের ইশতেহার চুঁইয়ে পড়েছে আমাদের উচ্চারণে, লেখায়, যাপনেও। আমরা বুঝেছি অতীত হোক, বা বর্তমান; হাথরস হোক, কিংবা আর জি কর— সব পরিসরেই প্রতিবাদ একটা অভ্যেস। আর সেটা জারি রাখা জরুরি। নির্ভয়া, অভয়া কিংবা তিলোত্তমাদের না ভোলার অঙ্গীকার, কিংবা বলা ভালো ভুলতে না পারা থেকেই কিছু ছড়িয়ে থাকা লেখাকে গেঁথে নেওয়ার এই প্রয়াস, নামান্তরে ‘স্পর্ধা’। দৃশ্যমান ক্ষোভের রেখা ফিকে হলেও যার জেগে থাকা, জাগিয়ে রাখা অফুরান।