2017

আবছা অ্যালবাম – ইস্টম্যানকালার:ঈশানী রায়চৌধুরী

বুদ্ধদেব গুহ বইটির ভূমিকায় লিখলেন -- ঈশানীর স্মৃতিকথন ‘আবছা অ্যালবাম - ইস্টম্যানকালার’-এর পাণ্ডুলিপি দেখলাম। চোখে এখন দেখতে পাই না, তাই একজন পড়ে শোনাল। শুনে আমি অভিভূত।  ঈশানীর লেখার হাত এবং দেখার চোখ, দুই-ই অত্যন্ত চমৎকার। উত্তর কলকাতার একটি বনেদী বাড়িতে বড় হয়ে ওঠা, তার কলেজ-জীবন এবং যৌথ পরিবারের আবহ, এই সবকিছু ফুটে উঠেছে এই লেখায়। তার দাদুর স্নেহ এবং প্রশ্রয় তাকে যেভাবে ঘিরে ছিল বর্মের মতো এবং দাদুর মৃত্যু... সেই বর্ণনা দিয়ে এই বইয়ের শুরু। অনুপুঙ্খভাবে। তারপর এসেছে তার লেখাপড়ার জগৎ, বন্ধু-বান্ধবীদের কথা এবং নানা অধ্যাপকের শারীরিক ও চারিত্রিক গুণাবলী সম্বলিত সরস ও সসম্ভ্রম বর্ণনা। রক্ষণশীল সমাজের টুকরো ছবিও এসেছে।...

Continue Reading →

নস্‌রুদ্দীন খোজার কিসসা -নীহারুল ইসলাম

তাঁকে নিয়ে কম বই হয়নি এ পর্যন্ত। তবু আরও একটা রইল নতুন করে। নীহারুল ইসলাম নস্‌রুদ্দীনের বেশ কিছু গল্প বেছে নিয়েছেন তাঁর পরবর্তী বইয়ের জন্যে। নস্‌রুদ্দীন খোজার গল্পগুলো যেমন হয় -- কিছুটা কৌতুক, কিছুটা দর্শন, মুচকি হাসি, হালকা বোকামি। *** খোজা তখন বিপুল ধনসম্পদের অধিকারী। তাঁর বাড়িতে ইয়ারদোস্তের অভাব নেই। খাচ্ছে দাচ্ছে, যাচ্ছে আসছে। দিনরাত্রি কোনও বিরাম নেই। এক পড়শি সব দেখেশুনে একদিন খোজাকে জিজ্ঞেস করল, ‘খোজাসাহেব, আপনার ইয়ারদোস্তের সংখ্যা কত হবে?’ খোজা বললেন, ‘গুনে দেখিনি ভাই।’ ‘তা একবার গুনে দেখুন না! কত হয়?’ ‘আরে গুনব তার সময় কই? ইয়ারদোস্তের খাতিরদারি করতেই তো সব সময় চলে যাচ্ছে। তবে তুমি যখন...

Continue Reading →

হাওয়া শহরের উপকথা-অলোকপর্ণা

অলোকপর্ণা 'ঝিঁঝিরা' লেখার পর লেখক হিসাবে বেশ কিছুটা রাস্তা পেরিয়ে এসেছে। বর্ণনা আরও সংযমী হয়েছে, ভাষা আরও বলিষ্ঠ। নতুন লেখকদের জন্যেই সৃষ্টিসুখ, র বই করতে গিয়ে সেই কথাটাই বারবার মনে পড়ে যায়। দ্বিতীয় গদ্য সংকলন 'হাওয়া শহরের উপকথা'র প্রচ্ছদ এঁকেছেন আর এক তরুণ তুর্কি, সৃষ্টিসুখ পরিবারের নতুন সদস্য নক্ষত্র সেন।

Continue Reading →

ফিসফাস ৩-সৌরাংশু

ফিসফাস'  জীবনের একটা অবকাশ, নামটা শুনলেই একটা মুচকি হাসি চলে আসে ঠোঁটে। স্মার্ট ভাবনা, স্মার্ট লেখা। জাস্ট পাশে বসে আড্ডা দিচ্ছেন লেখক। কখনও রোজকার দিনযাপন, কখনও পাড়ার রকে যেমন হয় আর কী... সামান্য জ্ঞানদান। তা মন্দ কী! এখন তো আবার হাজির হয়েছে শরণ্যার অ্যাইসি কি ত্যাইসি! 'ফিসফাস ৩'-এর একটা বড় আকর্ষণ। ============ একদিন মক্কেলকে রাতে পিনোক্কিওর গল্প শোনাচ্ছি। মিথ্যে কথা বললে নাকি তার নাক লম্বা হয়ে যেত! তা মিথ্যে কথা কি? সে বোঝাতে জান কয়লা! শেষে বললাম গল্পটা শেষ করি! তাও জিজ্ঞাসা করে, মা মিথ্যে কথা বলে? বাবা বলে? দাদা বলে? মামমাম বলে? দাদাই বলে? পাটকান বলে? গুট্টিগুতুম বলে? ঠাম্মি...

Continue Reading →

বেস্কিড পাহাড়ের ভার্জিন মেরি-নিরুপম চক্রবর্তী

সোক্কোরো, নিউমেক্সিকো : ১৯৭৭ আসিয়াছ মধ্যরাত্রে, সত্তর দশক তব বিপন্ন চরণে ধ্বনিয়াছে। দিশাহারা, দিকশূন্য, ত্রস্ত তুমি, তবুও তোমার কোথাও যাওয়ার ছিল নিদ্রিত সর্পের ন্যায় জনশূন্য হাইওয়ে বাহি নিভন্ত চাঁদের প্রতি চাহি, নিতান্ত ভঙ্গুর তুমি জাদুকর সাজিয়াছ, আস্তিনে লুকায়ে বেদনা সমনাম্বুলিস্ট যথা স্থির হয়ে দাঁড়ায়েছ (ঋজু হয়ে দাঁড়ায়েছ বুঝি!) রিওগ্রান্দে নামধারী, অতিশীর্ণ নদীটির ধারে নিস্তব্ধ একাকী অন্ধকারে নিস্তরঙ্গ তটিনীতে তোমার মুখের ছায়া হঠাৎ ছলাৎ করি উঠিয়াছে কেঁপে, রোডরানার পাখি হয়ে জাদুবলে উড়ে গেছে পকেটের চারটি ডলার, নির্জন নদীর বাঁকে ভয়াল দুঃস্বপ্নে লগ্ন ’মেরিক্যান ড্রিমে কয়েকটি বিষাক্ত সর্প চলিয়াছে ঝুমঝুমি বাজায়ে। সোক্কোরো নামক এক অলীক নগরী বুঝি জাগিয়াছে সেইরাত্রে নিদ্রাহীন শিয়রে তোমার।...

Continue Reading →

তদোগেন গিরতের কবিতা-সব্যসাচী সান্যাল

তদোগেন গিরতে পেশায় শিক্ষক। মঙ্গোলিয়ার ওন্দোরহান বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পারেটিভ লিটারেচার পড়ান। কবিখ্যাতি সেভাবে নেই। কোনও প্রকাশিত বই নেই। সময় কাটানোর জন্যই লেখালিখি করেন। তাঁর নিজের কথায় -- "কবিতা নিয়ে সেরকম কোনও অ্যাম্বিশন নেই। তাছাড়া আমার লেখাগুলি যে আদৌ কবিতা, মঙ্গোলিয়ার কোনও দৈনিক বা পত্রিকা সে কথা স্বীকার করে না।" তা এহেন তদোগেন গিরতের কবিতা নিয়ে সৃষ্টিসুখ প্রকাশন থেকে কলকাতা বইমেলা ২০১৮-য় প্রকাশিত হতে চলেছে কবিতা সংকলন -- 'তদোগেন গিরতের কবিতা'। অনুবাদ করেছেন সব্যসাচী সান্যাল। অনুবাদে কবির এমন অনায়াস চলাচল যে নিচে একটা কবিতা না দিয়ে পারা গেল না। আমি পাল্লা বেড়ালের ধুমসো লোম থেকে শব্দ বাছি আমি আর্গালি ভেড়ার পেট কাটতে...

Continue Reading →

অপ্রাকৃত ২-রূপঙ্কর সরকার

রূপঙ্কর সরকারের 'অপ্রাকৃত ২' বইটি অনলাইন অর্ডারের লিংক -- https://goo.gl/NRp6Pr অফলাইন -- সৃষ্টিসুখ, ৩০ এ সীতারাম ঘোষ স্ট্রিট, কলকাতা ৯। যোগাযোগ -- ৯০৫১২ ০০৪৩৭ ================================== সংকলন থেকে 'রান্নাঘর' গল্পের অংশবিশেষ। ================================= বেলাল বললেন, “আসলে মিসেস তালুকদার ভয় পেতেন, যদি তাঁর দস্যি ছেলে কারও বাড়িতে কিছু ভেঙে-টেঙে ফেলে। নিজেদের ঘরেও অনেক শখের জিনিস ছিল তো ওঁদের, খুব দুরন্ত ছিল বাচ্চাটা। সেদিনও রান্নাঘরে ওকে বন্ধ করে লন্ড্রিতে কাপড় দিতে গেছিলেন। রান্নাঘরের জানলাগুলো বন্ধ ছিল, খেয়াল করেননি। ছেলেটা একটা প্লাস্টিকের টুলের ওপর উঠে জানলা খোলার চেষ্টা করছিল। টুলটা হঠাৎ স্লিপ করে –” রাইফা চোখে ওড়না চেপে ধরলেন। “মাথার ঠিক পেছনে লেগেছিল কিচেনের টেবল টপটা। হাসপাতালেও...

Continue Reading →

বাংলা বইয়ের দাম কেন এত বেশি?

বাংলা বইয়ের দাম কেন এত বেশি সেই নিয়ে প্রায়ই কথা শুনতে হয় নানা জায়গায়। সত্যি বলতে কী, সৃষ্টিসুখ থেকে যে বইগুলো আমরা করি, চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সেগুলোর দাম কম রাখা যায়। কিন্তু সেটাও একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দস্তুর এটাই যে, বইয়ের মুদ্রিত মূল্যের ওপর ২০%-২৫% ছাড় দিতে হবে। কিছুদিন আগেই এক সিনিয়র প্রকাশকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। একটা বইয়ের দাম আমরা রাখছি ১২৫, ১০% ছাড়ে সেটা বিকোচ্ছে ১১২ টাকায়। ওই একই আকারের (মানে একই পৃষ্ঠাসংখ্যা, গড়নের) বইয়ের দাম তাঁরা রাখছেন ১৫০ টাকা। সেটা ২৫% ছাড়ে বিক্রি করছেন। হরেদরে পাঠক সেটা পাচ্ছেন ১১২ টাকায়। তিনি সুজন হিসাবেই পরামর্শ দিলেন -- যে...

Continue Reading →

আজে গল্প বাজে গল্প-তাপস মৌলিক(টগবগ উৎসব সংখ্যা ১৪২৪)

১ এই লাইনটা এই গল্পের প্রথম লাইন। প্রথম লাইনে গল্পটা শুরু হল। দ্বিতীয় লাইনে চলতে শুরু করল। এই চতুর্থ লাইন যখন এল, তখন গল্পটা চলছে। চলতে চলতে চলতে চলতে চলতে — পঞ্চম লাইনের পর গল্পটা দেখল যে প্রথম অনুচ্ছেদ প্রায় শেষ। সামনে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ। ২ শীতের সকালে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছিল। গল্পটা এসে তাকে ধাক্কাধাক্কি করে তুলে বলল, “আরে ওঠো ওঠো। এত ঘুমোলে চলবে?” দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বলল, “ওঃ, এই সাতসকালে কেন জ্বালাতন করছ? কী চাই তোমার?” গল্পটা বলল, “দু-একটা চরিত্র-টরিত্র দাও, নইলে চলি কী করে?” “কীরকম চরিত্র দরকার? বাজেট কত?” “মানে?” “আরে চরিত্র তো তেত্রিশ...

Continue Reading →

নিষিদ্ধ ফল-দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য

দশটি বসন্তকাল। কত দীর্ঘ সময়! তাদের যৌথ গুহাটির সামনে সে পা দুটি ভাঁজ করে বসেছিল। জায়গাটি নীরব। প্রথম বসন্তের বাতাসে শীতের মৃদু কামড়। সময় তার ওপরে বিশেষ ছায়া ফেলতে পারেনি। সেই আগেরই মতো সতেজ, সুন্দর রয়ে গেছে ইবা। অথচ তালাই তো আর সুন্দর নেই। তাকে দেখলে বৃদ্ধা মনে হয়। তার চামড়ায় বয়সের কুঞ্চন। তার পেটটি সর্বদাই উঁচু হয়ে থাকে কোনও এক অজ্ঞাত রোগের প্রকোপে। দশ বছরে আটটি সন্তান হলে এইরকমই হয়। মনে মনে নিজের সঙ্গে তালাইয়ের শরীরের তুলনা করে একটা বিকৃত আনন্দ হচ্ছিল ইবার। অথচ, হৃদয়ের গভীরে সে তালাইকে হিংসা করে। তীব্র, বিষময় ঈর্ষা! তালাইয়ের দু’দুটি ছেলের পিতা তার ঈশির।...

Continue Reading →