মধুরেণ সমাপয়েৎ

135.00

প্রেমের গল্পের মজা হল, কেবলমাত্র পরিণতির জন্য সে অপেক্ষা করে না। হয়তো তা অনুমেয়, সে যেমনই পরিণতি হোক না কেন। বরং এই হয়ে ওঠার পর্বেই তার যাবতীয় সুষমা লুকিয়ে। যে কাহিনিকার আমাদের আবেগের তন্ত্রী ছুঁয়ে ফেলতে পারেন, তিনি এই নির্মাণপর্বে এতটা সচেতন থাকেন যে, পাঠক একসময় তাঁর চরিত্রকেই আত্মীয় ভাবতে শুরু করে। যেমন নীতা মণ্ডল তাঁর উপন্যাস ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’-এ করেছেন। মধু আর মানসের সঙ্গে কয়েক পাতা কাটালেই তাদের সঙ্গ ছাড়তে আর ইচ্ছে করে না। আর নীতা তাঁর চরিত্রদের শুধু আপন প্রেমের দুনিয়ায় আটকে রাখেননি। বরং স্পেস দিয়েছেন। ফলে চরিত্রদের ব্যক্তিগত জীবন, জীবন অনুসন্ধানের অছিলায় ধরা পড়ে যায় এক বড় প্রেক্ষাপট। গ্রাম থেকে শহরের কলেজে পড়তে আসা, হস্টেল বাসের অভিজ্ঞতা, দাদাদের র‍্যাগিং, ফাইফরমাস খেটে দেওয়া, অচেনা মেয়েকে প্রপোজের টাস্ক পালন করতে গিয়ে ভেবলে যাওয়া, তারপর নবীনবরণের সুখস্মৃতি, সেমিস্টারে সাপ্লির ভয়, পরীক্ষায় বসা প্রায় প্রস্তুতিহীন হয়ে— এই সবকিছু আসলে শুধু মধু বা মানসের নয়। এ আমাদের অনেকের কথা। এ আমাদের অনেকেরই অভিজ্ঞতা। নীতার কাহিনি গড়গড়িয়ে এগিয়ে যায় আর একটা সময় আমরা মিস করতে শুরু করি সেই ফেলে আসা কলেজজীবনকে। তার ভালো-মন্দ, ভয়-উদ্বেগ নিয়েই আমরা যেন ছুঁতে চাই সেই সময়টাকে। কিন্তু তা তো আর হওয়ার নয়। অথচ মধু আর মানসের জার্নিটা এখনও সম্ভব। পাঠক তাই এই তরুণ-তরুণীকেই আত্মীয় ভেবে নিতে পারে, অপেক্ষা করেন তাঁদের সম্পর্কের পরিণতি। আগেই বলেছি, প্রেমের গল্পের পরিণতি অনুমেয়। কিন্তু যদি কোনও চরিত্র পাঠকের নিজের নিকট আত্মীয় হয়ে ওঠে, তবে সেই পরিণতির জন্যই আগ্রহ ও উৎকণ্ঠা দুইই বাড়ে। নীতা তাঁর গোটা উপন্যাসে এই কৌশলটি কার্যকর করতে পেরেছেন বলেই সুখপাঠ্য হয়ে উঠেছে ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’। অন্তত আমাদের তাই-ই বিশ্বাস। বাকিটা পাঠক বলবেন। তবে প্রেমে পড়া আর প্রেম পড়া— কোনোটাই বোধ হয় নেহাত মন্দ অভিজ্ঞতা নয়। অতএব…

Customer Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “মধুরেণ সমাপয়েৎ”

Your email address will not be published. Required fields are marked *