নেড়ুদা

180.00

রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের রম্য রচনা সংকলন ‘নেড়ুদা’ হাস্যরস পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মানবিক দিকগুলোর মূল্যায়নে বাধ্য করে।

নেড়ুদা ফেল করে করে ক্লাস এইটে এসে লেখকের সহপাঠী হলেন। অচিরেই নেড়ুদার প্রতিভার নানা উদাহরণ পাওয়া যেতে লাগল। নেড়ুদার বাংলা খাতা থেকে দু-একটা বাগধারা তুলে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না।
————————-
সাবধানের মার নেই — সাবধানের বাবার মুখভর্তি দাড়ি-গোঁফ আছে, কিন্তু সাবধানের মার নেই।
উত্তম মধ্যম — সুপুড়ি দেবীকে নিয়ে উত্তমকুমার গাড়ি করে দমদম বেড়াতে গিয়েছিলেন, তারপর সুপুড়ি দেবীর অনুরোধে উত্তম মধ্যম গ্রাম গেলেন।
আলালের ঘরে দুলাল — আলালের ঘরে দুলাল গিয়ে বলল, “মাসিমা, আলাল আছে?”
————————-
এহেন নেড়ুদা নানা বিচিত্র ঘটনা একক কৃতিত্বে ঘটাতে শুরু করল। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল একটি দেওয়াল পত্রিকা একাই লিখে প্রকাশ করা। দেওয়াল পত্রিকাটিতে সংবাদ, গল্প, ক্ষুদ্র উপন্যাস, কবিতার পাশাপাশি নেড়ূদা মাফিক ধাঁধাও ছিল — ‘মানুষ কখন ডিম পাড়ে?’ উত্তরটা অবশ্য বইটি না পড়লে দেওয়া যাবে না।
যাই হোক, এক সময় নেড়ুদার জীবনে নাটকীয় মোচড় এল। গল্পেও। নেড়ুদার মতো বিচ্ছু এক ছাত্র গিয়ে পড়ল ইঞ্জিনীয়ার ছাত্রদের মক্কা আই আই টি-তে। না, কোনও মুন্নাভাই সুলভ ব্যাপার নয়। মাথায় যে শয়তানি বুদ্ধি গজগজ করতে তারই সঠিক ব্যবহারে এমনটা সম্ভব হয়েছিল।
কিন্তু গল্প এখনও শেষ নয়। সেখানেও নেড়ুদা নিজের মতো করে আড্ডা জমিয়ে বসল। যেমন একবার এক সিনিয়ারকে মুখের ওপর চড়াম করে বলেছিল — “শোন ফেলু, এবার কিন্তু একটা লোহার রড আর্ধেকটা গরম করে ঠান্ডা দিকটা তোর পেছনে ঢুকিয়ে দেব।”
কিন্তু নেড়ুদা ঠান্ডা দিকটা ঢোকাবে কেন? নেড়ুদা মৃদু হেসে বলল, “তাহলে গরম দিকটা বাইরে থাকবে, হাতে করে ধরে আর বের করতে পারবে না।”
কিন্তু শুধু সিনিয়ারদের এমন দুমদাম হুমকি নয়, নেড়ুদা জুনিয়ারদেরও র‍্যাগিং করত। কিন্তু তাতে কিল-চড়-গালিগালাজ কিছুই থাকত না। নেড়ুদার র‍্যাগিং নেড়ুদার মতোই বুদ্ধিদীপ্ত। সত্যি বলতে কী, এমন সব বিচিত্র পরিকল্পনা ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে আরও এলে দেশটার ছবি পালটে যেত হয়তো।
যাক গে, রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমের সঙ্গে যাদের পরিচিতি নেই, যারা প্রথম বারের জন্যে নেড়ুদা পড়বে, তাদের অভিজ্ঞতাকে আমি ঈর্ষা করি। আর যারা নেড়ুদাকে জানে, তারা জানে এ বই কী হতে চলেছে।

বইটির নির্বাচিত অংশ নিচে রইল।

[dflip id=”3299″][/dflip]