আমার কলকাতা

399.00

‘এ কলকাতার মধ্যে আছে আর একটা কলকাতা/ হেঁটে দেখতে শিখুন।’– শঙ্খবাবুর এ পঙক্তি বাঙালির মুখস্থ বটে। কিন্তু কতজন ওই পেটের ভিতরের কলকাতাকে আবিষ্কার করতে হাঁটতে শিখেছেন বা চান তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাছাড়া বিশ্বায়নের বদলে যাওয়া পৃথিবীতে আজ আর বলা যায় না, কলকাতা আছে কলকাতাতেই। একদা যে কলকাতা ছিল সাহেবদের, যে কলকাতা ট্রাম আর টেস্ট ক্রিকেটের, যে কলকাতা মেট্রো সিনেমা আর স্যাক্সোফোনের, তা তো আজ আর নেই। তবে সত্যিই কি নেই? আছে, শ্রুতিতে আর স্মৃতিতে। সকলেই নন, কেউ কেউ নিরন্তর প্রেমে সেই কলকাতাকে আগলে রাখতে পারেন। যেমন পেরেছেন রূপঙ্কর সরকার। তিনি শুধু কলকাতাতে থেকেছেন, বড় হয়েছেন, চাকরি করেছেন– তা-ই নয়। তিনি এই কলকাতাকে হেঁটে দেখতে শিখেছেন। প্রতিটি ইট-কাঠ, ফুটপাথ, প্রতি বাস-ট্রাম, খাওয়া-দাওয়া, গানে-বাজনায় কলকাতাকে আত্মস্থ করেছেন। অথবা নিজেকে মিশিয়ে দিয়েছেন এই শহরের হাওয়ায়। আজ সবকিছু, এমনকী কালার প্যালেট পালটে যাওয়া শহরে স্বাভাবিকভাবেই নস্ট্যালজিয়া আর বিষণ্ণতা তাঁকে ঘিরে ধরে। কখনও বিপন্নতাও। কিন্তু সময়কে তো কিছুতেই উপেক্ষা করা যায় না। তবে সেই বহমান সময়কেই চুরি করে অক্ষরবন্দি করে রাখা যায় অবশ্যই। সে কাজটিই নিপুণ মুনশিয়ানায় করেছেন লেখক। ফলে বাঁধা পড়ে গিয়েছে এক অতীত কলকাতা। যে কলকাতা আমাদের এই সেদিনও ছিল, কিন্তু আজ ইতিহাসেও দেখা মেলে না তেমন। লেখক, অবশ্য ডিসক্লেমার দিয়ে বলেন, তিনি ইতিহাস লিখতে বসেননি। শুধু তাঁর স্মৃতির কলকাতাকে তুলে ধরছেন মাত্র। কিন্তু সেই স্মৃতির খননে যে শহর প্রতিভাত হয়েছে, যে ঘটনা, যে মুহূর্ত, যে তথ্যাদি ধরা পড়েছে তার ঐতিহাসিক মূল্যও যে বিন্দুমাত্র কম নয়, তা সমঝদার পাঠকমাত্রই বুঝবেন। নিছকই গল্প করার আঙ্গিকে এই ধরে রাখা ইতিহাস ভবিষ্যৎ জিজ্ঞাসুর অবশ্যপাঠ্য তো হয়ে উঠবেই, এমনকী আমাদেরও দেবে স্মৃতির শহরে সুহানা সফরের সুযোগ।

প্রচ্ছদ – বিশ্বনাথ দাশগুপ্ত

Customer Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “আমার কলকাতা”

Your email address will not be published. Required fields are marked *