এই কথন এক অজ পাড়াগাঁয়ের দরিদ্র মেয়ের। আশৈশব সে পেয়েছে বিচ্ছেদ, প্রিয়জনের মৃত্যু, মা-বাবা দুজনকেই হারিয়েছে। তারপর যদি বা কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর সুরাহা হল, জীবনে এল আনন্দ, তাও রইল না। এ মেয়ে ভালোবেসেছিল একজনকে। বিশ্বাস করেছিল। জানত না, তার আড়ালে রয়েছে কুটিল এক ষড়যন্ত্র। যার হাত ধরে সে ঘর ছেড়েছিল, দেশ ছেড়েছিল, নিশ্চিন্তে মাথা রেখেছিল যার বুকে, সে-ই তাকে নিয়ে গিয়ে ফেলল ভয়ংকর এক অবস্থায়। বাংলাদেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেল ভারতে। এখানেই প্রবঞ্চনার শেষ নয়। দিন-রাত তাকে আটকে রেখে চলল চরম শারীরিক লাঞ্ছনা। একজন নয়, অনেকে মিলে। ভোগের নৃশংসতা রক্তাক্ত মেয়েটির কোনও তোয়াক্কাই করেনি। তবু সে নিস্তার পেল একদিন আচমকা। তারপর ঠাঁই হল এক হোমে। অকূল পাথারের ভেতরে ডুবে যেতে যেতে আরও একবার শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করল এই মেয়ে। এ কাহিনি শুধু এই মেয়েরই নয়। তারই মতো আরও অনেকের, যাদের খোঁজ কেউ রাখে না। আগুনের ভেতর থেকে উঠে এসে যে ডানা ঝাপটায়, এ কাহিনি সেই আগুনপাখির নিজস্ব চিৎকার। চোখের জলের কথন শব্দের ফোঁটায় ঝরে পড়েছে এই লেখায়।
Be the first to review “পেরিয়ে এলাম অন্তবিহীন পথ”